ঝিনাইদহে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে বাড়ছে কিশোর অপরাধ
ঝিনাইদহের চোখ=
ঝিনাইদহে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে বেড়ে চলেছে কিশোর অপরাধ। এর মধ্যে সংঘটিত হয়েছে খুন, চুরি, ছিনতাইসহ বেশ কিছু ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, যারা এ অপরাধের সাথে জড়িত তারা বেশীর ভাগই কিশোর বয়সের। কোন প্রতিবন্ধকতা না থাকায় ঝিনাইদহ শহর ও জেলার বিভিন্ন বাজার, গ্রামাঞ্চলের চায়ের দোকান গুলোতে কিশোরদের ধূমপানের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে সুশীল সমাজের ধারণা স্কুল গামী কিশোরদের হাতে দামি মোবাইল ও প্রযুক্তির অপব্যবহারে তারা জড়িয়ে পরছে খুন ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধে। তাছাড়া অভিভাবকদের অসচেতনতার কারনে বিপথগামী কিশোররা নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরিসহ জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে।
জানাযায়, কালীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর গ্রামে চলতি বছরের মার্চ মাসে নাঈম নামের নবম শ্রেনীর এক স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করে তার এলাকার বন্ধু জহুরুল (১৬)। নিহত নাঈম (১৫) স্থানীয় কোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। পুলিশ সূত্রে জানাযায় ছিনতাইয়ের টাকা ভাগাভাগি করতে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া ছিনতাই আতংক বিরাজ করছে ঝিনাইদহ শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। সন্ধ্যার পরপরই এক শ্রেনীর উঠতি বয়সি কিশোররা বিভিন্ন সড়কে মটরসাইকেল ব্যবহার করে পথচারীদের মোবাইলসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে অবাধে পালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। এ ধরনের একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনায় যে কোন সময় প্রাণহানী ঘটতে পারে বলে ক্ষতিগ্রস্থদের আশংকা।
অনেকের সাথে কথা বলে জানাযায় যারা এ অপরাধের সাথে জড়িত তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৩ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
ঝিনাইদহ জেলা মানবাধিকার সভাপতি মোঃ অমিনুর রহমান টুকু বলেন, দেশের বাহিরে কিশোর অপরাধের সংখ্যা অনেক বেশি। সেই বাসত করনার মতো আমাদের দেশে প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি বেশির ভাগ নারী ডিভোর্স হওয়ার কারনে পরিবার থেকে ওই কিশোররা আলাদা হয়ে পড়াই কিশোর অপরাধ দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সেই সাথে মিডিয়ায় প্রচারিত বড় শহর গুলোর কিশোর গ্যাং এর সংবাদও উৎসাহিত করছে কিশোরদের। এখনি পদক্ষেপ না নিলে সাংস্কৃতিক ভাবে ঝিনাইদহের ভবিষ্যতে সামাজিক নৈরাজ্যসহ ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। গতানুগতিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সামাজিক নেতৃত্ব ও প্রশাসনকে নির্মোহভাবে কাজ করতে হবে। কারণ সামাজিক নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে কারও কিশোর নিরাপদ থাকবেনা।
ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মুনতাসীরুল ইসলাম বলেন, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার অভাব, তাদের হাত দামী মোবাইল আর এসব মোবাইলে প্রযুক্তির অপব্যবহার,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহজলভ্যতা কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে অভিভাবকদের অসচেতনতায় কিশোররা জড়িয়ে পরছে বিভিন্ন অপরাধে, আসক্ত হচ্ছে নেশায়। তারা নেশার টাকা জোগাড় করতে পা বাড়াচ্ছে অপরাধ জগতে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছি। যথাযথ আইন প্রয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে এ বছর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচটি মামলায় আটজন কিশোর অপরাধীকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র প্রেরণ করা হয়েছে।