শৈলকুপা

ঝিনাইদহের সোনিয়ার মৃত্যু ছিল প্ররোচনামুলক আত্মহত্যা

ঝিনাইদহের চোখঃ

শৈলকুপা উপজেলার গোয়ালখালি গ্রামের গৃহবধু সোনিয়ার মৃত্যু ছিল প্ররোচনামুলক আত্মহত্যা। এ ঘটনার জন্য দায়ী তার শ্বাশুড়ি মর্জিনা খাতুন। আত্মহত্যা করার আগে সোনিয়া একটি নোট লিখে রেখে যায়। সেখানে তার মৃত্যুর জন্য শ্বাশুড়ীকে দায়ী করে। স্বামীর কাছে যেতে না দেওয়া, রান্না ভালো হলেও রাগারাগি করা, স্বামীর সাথে গল্প করলে বকা-ঝকা করাসহ নানা বিষয় নিয়ে শ্বাশুড়ী তাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো।

কিন্তু সোনিয়ার মৃত্যু নিয়ে যে গ্রাম্য রাজনীতি ও দলাদলি শুরু হয় তা তার ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর অবসান ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি মৃত্যুকে পুজি করে হত্যা মামলা ও বাড়িঘর ভাংচুরের মতো ঘটনা ঘটায়। পাল্টাপাল্টি বাড়ি ভাংচুরের পাশাপাশি গ্রাম্য মাতুব্বরদের নামে করা হয় মামলা। বিষয়টি নিরয়ে বিপাকে পড়ে পুলিশ।

সরেজমিন এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রেমের সর্ম্পকের জেরে প্রায় এক বছর আগে শৈলকুপা উপজেলার গোয়ালখালি গ্রামের ফিরোজ হোসেনের মেয়ে সোনিয়ার বিয়ে হয় একই গ্রামের বাদশা হোসেনের ছেলে সজিবের সাথে। বিয়ের পর থেকে শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের সাথে বনিবনা হচ্ছিল না সোনিয়ার। পাশাপাশি বাড়ি আর সোনিয়ার পরিবারের লোকজন গরীব হওয়ায় সোনিয়ার শ্বাশুড়ি মর্জিনা খাতুন মেনে নিতে পারছিলেন না। স্বামীর সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল সোনিয়ার। ভালবেসে বিয়ে করায় দু’জনের মাঝে সম্পর্ক ছিল খুব ভালো। দিনের পর দিন পিতার বাড়িতে যেতে না পারা ও বদ মেজাজি শ্বাশুড়ির দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ২১ এপ্রিল ঘরের ফ্যানের সাথে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে সোনিয়া।

সোনিয়ার মৃত্যুর পর মামলা গ্রহনের দাবিতে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। স্বামী সজিবের বাড়ি ভাংচুর লুটপাট করা হয়। তবে প্ররোচনামুলক আত্মহত্যার মামলাটি এখনো হয়নি। সোনিয়ার শ্বাশুড়ি মর্জিনা খাতুন ছিল তার মৃত্যুর অন্যতম কারণ। মুলত তার নির্যাতনেই আত্মহত্যার পথ বেচে নেয় সোনিয়া।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আয়ুবুর রহমান জানান, সোনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ওই সময় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে সোনিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে যৌতুকের কারণে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করে। কিন্তু তার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার কথাটি এসেছে। এখন মামলাটি প্ররোচনামুলক আত্মহত্যার দিকে মোড় নিবে। ওসি বলেন সোনিয়ার শ্বাশুড়িসহ দায়ী ব্যক্তিরা ছাড় পাবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button