জানা-অজানা

শীতের প্রকোপ বাড়ায় নতুন ‘স্ট্রেইনে’ আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

ঝিনাইদহের চোখ-

বাংলাদেশে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশু রোগী বাড়ছে ৷ কভিড পরবর্তী মারাত্মক জটিলতা নিয়েও ভর্তি হচ্ছে শিশুরা ৷ এরমধ্যে অনেকে করোনার নতুন ধরনে (স্ট্রেইন) আক্রান্ত হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন কোনো কোনো চিকিৎসক। তবে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা ৷

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, এখন পর্যন্ত করোনায় ১০ বছরের কম বয়সী শিশু মারা গেছে ৩৪ জন ৷ আর ১১ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে মারা গেছে ৫৭ জন ৷ করোনা আক্রান্ত শিশুদের জন্য প্রথম করোনা ইউনিট চালু করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল৷ সেখানে এখন ২৪ জন রোগী আছে৷

ঢাকা শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটেও তিন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ তবে এ মাসের শুরুতে সেখানে ১৮ শিশু চিকিৎসাধীন ছিল৷

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা শামসাদ বলেন,এখন নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে অনেক শিশু হাসপাতালে আসছে৷ এদের অনেকের সমস্যা এতটাই গুরুতর যে,করোনা পরীক্ষা করার সময়ই পাওয়া যায় না ৷ একটা শিশু হাসপাতালে এলে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার প্রাণ বাঁচানো৷ ফলে আমরা আগে তার চিকিৎসা শুরু করি ৷ এরপর প্রয়োজন মনে করলে করোনা পরীক্ষা করাই৷ সেখানে পজিটিভ এলে করোনা ইউনিটে তাকে স্থানান্তর করা হয়৷ তবে শিশু রোগীর হার এখনো কমেনি৷ এখন নতুন করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে পোস্ট কোভিড জটিলতা-মাল্টিসিস্টেম ইনফেমেটরি সিন্ড্রোম ইন চিলড্রেন-এ (এমআইএস-সি)৷ এটা শিশুদের জন্য খুবই মারাত্মক৷

ঢাকা শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. নওশাদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের হাসপাতালে এ পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ১৯০ থেকে ২০০ জনের মতো শিশুর চিকিৎসা দিয়েছি৷ এর মধ্যে মৃত্যুও হয়েছে৷ তবে তাদের করোনার আগে থেকেই অন্য রোগ ছিল৷ বিশেষ করে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু করোনা হলে বাঁচানো কঠিন৷ গত বছরের এই সময় আমরা প্রতিদিন শ্বাসকষ্টের রোগী পেয়েছি ১৩০ থেকে ১৪০ জন৷ এবার সেখানে আড়াইশ রোগী পার হয়ে গেছে৷ সবার পরীক্ষা করতে না পারার কারণে বোঝা যাচ্ছে না,এরা কভিড না নন-কভিড৷ তবে অভিভাবকদের এক্ষুণি সতর্ক হতে হবে৷’’

চিকিৎসকরা বলছেন, নয় থেকে ১২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে আতঙ্কের খবর হচ্ছে, এ বয়সের শিশুরা আক্রান্ত হলে তাদের ফুসফুসও সংক্রমিত হচ্ছে৷ এ প্রসঙ্গে রাজধানির একটি বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার মৌসুমি মল্লিকা বাবা-মায়েদের পরামর্শ দিয়েছেন, নিতান্তই প্রয়োজন না হলে সন্তানকে বাইরে বের না করা, জনসমাগমস্থলে না নেওয়া এবং অতি জরুরি প্রয়োজনে অবশ্যই মাস্ক পরানো ৷

তাছাড়া বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের আসা যাওয়া সীমিত রাখা এবং বাড়ির বড়দের বাইরে বের হবার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দু’ই শিশু সন্তানের জননী ডাক্তার মৌসুমি মল্লিকা।

বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি প্রবীণ অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন বলেন, এখন কিন্তু করোনার নতুন ধরনে (নিউ স্ট্রেইন) আমাদের শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে৷ অন্যদিকে শিশুদের জন্য কোনো ধরনের ভ্যাকসিনের ট্রায়েলের কথা আমরা শুনিনি ৷ তার অর্থ হল শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন কবে আসবে কেউ জানে না৷ যে ভ্যাকসিন আসছে সেটা বড়দের জন্য৷ ফলে সামনের দিনে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে৷ ফলে শিশুদের সুরক্ষা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই ৷- পার্সটুডে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button