ঝিনাইদহে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
ঝিনাইদহের চোখ-
আবহমান কাল থেকে কৃষকের হালচাষের অবিচ্ছেদ্য অংশ গরু। দেখলেই বোঝার উপায় নেই এই প্রাণীটিও হতে পারে মানুষের বিনোদনের একটি অংশ। প্রতিযোগিতা শুরুর আগেও দেখা যায় তার শান্ত স্বভাব। কিন্তু জোয়াল কাঁধে দেওয়ার পর কর্তার হাতের ছোঁয়ায় যেন মুহুর্তে পাল্টে যায় চরিত্র। একে অপরকে পেছনে ফেলতে ছুটতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। যা দেখে উচ্ছ¡ছিত হাজার হাজার দর্শক। গরুর গাড়ির এমন রোমাঞ্চকর প্রতিযোগিতা দেখতে রোববার ঝিনাদিহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামের মাঠে জড়ো হয়েছিল ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলার কয়েক হাজার মানুষ। গান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিযোগিতা।
ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা রুবেল হোসেন নামের এক দর্শক বলেন, গরু গৃহপালিত প্রানী। মানব জীবনে এর উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু গরুর গাড়ি যে মানুষকে আনন্দ দিতে পারে তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না।
শাহেদ নামের আরও একজন বলেন, আধুনিক যুগে এসে গরুর গাড়ির এমন দৌড় প্রতিযোগিতা এই বেতাই গ্রামে এসে দেখে আমাদের খুব ভালো লাগছে। আমরা অনেক দুর থেকে এসছি। আমাদের খুবই ভালো লাগছে। এরকম আয়োজন হলে আমাদের যারা নতুন প্রজন্ম তারা এর সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবে। তাই প্রতিনিয়ত আয়োজন করা দরকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, এই গান্না একসময় সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। এখন মানুষ গান্নায় বিনোদনের জন্য আসে। সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ, মাদক দুর করতে হলে এ ধরনের বিনোদনের কোন বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানের আয়োজক সহযোগি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আতিকুল হাসান মাসুম জানান, দিনভর এ খেলায় যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে বাছাই করা মোট ৩৮টি রুর গাড়ি অংশ নেয়। খেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরের আবু সাঈদ। পুরস্কার হিসেবে তার হাতে তুলে দেয়া হয় একটি গরু। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার খালিদুর রহমান। তাকে দেওয়া হয়েছে একটি বাইসাইকেল ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন বেতাই গ্রামের আমিরুল খাঁ। তাকে একটি ছাগল উপহার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজক আব্দুল ওহাব বলেন, গত ৯ বছর যাবত এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। এলাকার মানুষের আনন্দ দেওয়ার জন্য আর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা সম্ভব।