ঝিনাইদহে ফুল ব্যবসায় সফল জমির
কামরুজ্জামান লিটন, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহসহ গোটা দক্ষিনাঞ্চলে ফুল চাষ ও ফুল ব্যবসা করে এক মডেল ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন জমির উদ্দীন। তার হাত ধরে সমৃদ্ধ হয়েছে ঝিনাইদহের ফুল চাষ। বানিজ্যিক ভাবে ফুল চাষ করে যে লাভবান হওয়া যায় তার জলন্ত উদাহরণ হচ্ছে জমির উদ্দীন।
ঝিনাইদহের বিভন্ন উপজেলার কৃষকদের ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করে তিনি ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ীদের কাছে ব্যাপক পরিচিত অর্জন করেছেন। ২০১৮ সালের ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফুল মেলায় দক্ষ ফুল চাষি হিসেবে তাকে এওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
জানা যাায়, জমির উদ্দীনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দলকা লক্ষিপুর হলেও ১৯৯৬ সাল থেকে ঝিনাইদহে বসবাস করেন। ২৫ বছরের ফুলমাখা জীবনে তার হাত ধরে আলোকিত হয়েছেন অনেক ফুলচাষি। জমির উদ্দীন এখন ঝিনাইদহ শহরের ব্যাারীপাড়ার আব্বাস উদ্দীন (রহঃ) সড়কে “জমির ফুল ঘরের মালিক”। এই ফুল ব্যাবসা তার পরিবারের জীবন বদলে দিয়েছে। নিজে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পাশাপাশি তিন ভাইকে করেছেন স্বাবলম্বি। ১৯৯৬ সালে দামুড়হুদা উপজেলার দলকা লক্ষিপুর গ্রাম থেকে তিনি ঝিনাইদহে আসেন। তার পিতার নাম আব্দুর রহিম বিশ্বাস।
ফুল ব্যাবসায়ী জমির উদ্দীন জানান, এক সময় তিনি ফেরি করে ট্রেনে ট্রেনে রজনীগন্ধা ফুলের স্টিক বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে তিনি জমি লীজ নিয়ে সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নে ফুল চাষ শুরু করেন। তার দেখাদেখি জেলার কালীগঞ্জ ও মহেশপুরে ফুলচাষ শুর হয়। তিনি চাষিদের ফুল চাষে নানা ভাবে উদ্বুদ্ধ করতেন। বর্তমান তিনি ঝিনাইদহ ফুল সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি জানান, ব্যবসার পাশাপাশি তিনি এখনো ফুল চাষ করেন। ঝিনাইদহ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে ফুল বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। যশোরের গদখালীতে ইউএসএইড এর অর্থায়নে নির্মিত কোল্ডস্টোর পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য জমির। জমিরে প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের উদ্যোগে গান্না বাজারে ফুলের সরকারী মার্কেট হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দীন মোঃ বাবর জানান, ঝিনাইদহের মাটি ফুল চাষের জন্য উপযোগী। এখানকার কৃষকরাও বেশ দক্ষ ও ফুল চাষে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। তাছাড়া ঢাকার সাথে ঝিনাইদহের যোগাযোগ ব্যবস্থা অন্যান্য জেলার তুলনায় ভাল হওয়ায় ঝিনাইদহের ফুল মার্কেট পাচ্ছে।
বাবর অরো জানান, আমরা কৃষি বিপনণ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গায় ফুলের সরকারী মার্কেট করার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন প্রতিটি উপজেলার ফুল চাষ এলাকায় পর্যায়ক্রমে মার্কেট করা হবে। এছাড়া সরকারের কাছে গাদা ফুল সংরক্ষনে বরফ কল ও কুলিং সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেছি, যাতে ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা গাদা ফুল সংরক্ষন করতে পারে। ফুল চাষিদের আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর ফুল চাষে দক্ষ করা গেলে ঝিনাইদহ বিশ্ব বাজারে স্থান করে নিতে পারবে বলে জহির উদ্দীন মোঃ বাবর মনে করেন।