ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত ঝিনাইদহের কৃষক
আরিফ মোল্ল্যা, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহের চোখ-
কালীগঞ্জ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ইতোমধ্যে কাদা মাটিতে বুনতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঘের শীতকে উপেক্ষা করে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা। সম্প্রতি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সার ও বীজ চারা নিয়ে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন তারা। বিরামহীন গতিতে চলছে ইরি-বোরো রোপণের কাজ।
চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধান রোপণে বীজ-চারা সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বিশেষ করে বর্গাচাষিদের মধ্যে বীজ-চারার সংকট থাকায় বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে গুণগত মান যাচাই-বাছাই করে চারা ক্রয় করতে দেখা গেছে তাদের।
অন্তত এক যুগ পরে রোপা আমন ধান চাষে এবার লাভের মুখ দেখছে কৃষক। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ মৌসুমে আমন ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও কৃষক যা পেয়েছেন গত এক যুগে এমন বাজার দর পায়নি। সব মিলিয়ে আমন ধান চাষে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ কারণে কৃষকরা এবার বোরো-ইরি ধান চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েছেন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত মাঠে হেমন্তের আমণ ধানের মম গন্ধে নবান্নের উৎসবের ইতি না হতেই কৃষকরা বোরো ইরি ধান চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মাঠে নন্দ দাস নামের এক কৃষকে বোরোইরি ধান রোপন করতে দেখা গেছে। তিনি জানান, বহুদিন পর এবার আমন ধানে ভালো দাম পাওয়া গেছে। তাই এবার বেশি করে বোরো ইরি ধান চাষ করছি। তিনি ইতোমধ্যে ব্রি-২৮, বাসুমতি, ও শুভলতা জাতের ৩ বিঘা জমিতে বোরো ইরি ধান রোপণ শেষ করেছেন।
একই গ্রামের কৃষক জিনারুল জানান, ৭ বিঘা জমিতে মিনিকেট ও কাজল লতা জাতের আমন ধান চাষ করে ফলন পেয়েছেন ১৮ মণ করে। ধান বিক্রি করেছেন এক হাজার ২০ টাকা মণ। তিনি জানান, অনেক বছর পরে কৃষক ধানের ন্যায্য দাম পেয়েছেন। তিনিও ৮ বিঘা জমিতে বোরো ইরি ধান চাষের জন্য বীজতলা (পাতো) দিয়েছেন।
উপজেলার ছোট শিমলা গ্রামের ধান ব্যবসায়ী আজাদ আলী জানান, বর্তমান মোটা ধান বেচাকেনা হচ্ছে ৯২০ থেকে ৯৮০ টাকা, চিকন ১০০০ থেকে ১০৮০ টাকা মণ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাইমেন আক্তার জানান, আমনে বাম্পার ফলন আর কাঙ্খিত দাম পাওয়ায় কৃষকরা এবার ধান চাষে লাভবান হয়েছেন। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো ইরি ধান চাষে কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছেন।