ঝিনাইদহের গান্না ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নাসির উদ্দিন মালিথাকে একটি হত্যা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আইনে খাতায় প্রায় ৯ বছর পলাতক ছিলেন তিনি। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা দুইটি মামলায় জামিনের আবেদন জানায় সে।
ওই আদালতের বিচারক মো: গোলাম আযম আবেদনের শুনানী শেষে বিস্ফোরক মামলায় জামিন মুঞ্জুর করেন এবং হত্যা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্রায় ৯ বছর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় চার্জশীট ভুক্ত পলাতক আসামী ছিলেন নাসির উদ্দিন। ২০১৬ সালের ২৮ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে (৬ নং গান্না) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার পরেও অজ্ঞাত কারনে গ্রেফতার করা হয়নি তাকে। প্রকাশ্যে ঘুরেছেন, সভা সমাবেশ করেছেন। চলতি মাসে ঘটনাটি নিয়ে নতুন করে তোলপাড় শুরু হলে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় সে।
আদালত সুত্র জানায় ২০১০ সালের ৭ জুলাই রাত অনুমান পোনে ৮টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৬ নং গান্না ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মৃত শাহার আলী মন্ডলের ছেলে মোঃ জাকির হোসেন মন্ডল ওরফে শান্তি মন্ডল (৪৫ কে বোমা মেরে আহত করা হয়। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল এবং পরে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাতালে ভর্তির পরে মৃত্যু হয় জাকিরের। তৎকালীন গান্না ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন তিনি । এ হত্যার ঘটনায় নিহতের শ্বশুর একই ইউনিয়নের চান্দেরপোল গ্রামের মোঃ সিরাজুল ইসলাম মালিথা ঘটনার তিন দিন পরে ২০১০ সালের ৯ জুলাই ঝিনাইদহ থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সুত্র ধরে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১১ সালের ১০ অক্টোবর স্থানীয় বেতাই চন্ডিপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই শিকদার মতিয়ার রহমান ৯ জনে নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ওই চার্জশীটে ৯ নাম্বার আসামী করা হয় গান্না ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দীন মালিথাকে। সেই থেকে আইনের খাতায় পলাতক ছিলেন তিনি।
একই সুত্র জানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা চার্জশীটের আলোকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এবং ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নাসির উদ্দীনসহ মামলার অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক ভাবে চার্জ গঠন করা করেন। সব শেষ চলতি মাসে চেয়ারম্যান নাসির মালিথাসহ ৪ পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছে।