ঝিনাইদহের স্বপ্নবাজ রফিকুলের মাশরুম চাষে ঘুরে দাড়ানোর গল্প
ঝিনাইদহের চোখ-
মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকে। তেমনই এক সফল চাষী ও উদ্দোক্তা হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম রকি।
করোনার কারনে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে এসে হতাশার সাগরে ডুবে বন্ধুর পরামর্শ নিয়ে সল্প পুজি নিয়ে ঔষধি সবজি মাশরুম চাষে আগ্রহী হন রফিকুল। ধানের বিনিময়ে টাকা ঋণ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেন ২০২০ সালে। নাম দেন সপ্ন মাশরুম সেন্টার । মাশরুম চাষের যাত্রা শুরু করেন বসত ঘরের একটি ছোট্ট জায়গা নিয়ে । তার সেই সপ্ন বাস্তবায়ন হয়ে এখন তিনি সফল মাশরুম চাষি। জেলার বিভিন্ন স্থানের লোকজন তার মাশরুম সেন্টার পরিদর্শন করেন। মাশরুম ক্রয় করতে এবং তার কাছ থেকে মাশরুম চাষের কলাকৌশল শেখার জন্যে আসেন অনেকে।
রফিকুল জানান বর্তমানে মাশরুম চাষ করে তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে ভালো টাকা আয় করতে পারছেন। প্রথম স্পন থেকে ২৫ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। ২ কেজির একটি স্পন প্যাকেট থেকে একবার ফলনে ৩০০-৫০০ গ্রাম পর্যন্ত মাশরুম পাওয়া যায়। তিনি প্রতিদিন ২-৩ কেজি পর্যন্ত মাশরুম বিক্রি করে থাকেন । প্রতিকেজি মাশরুম বিক্রি হয় ২৫০-৩০০ টাকা দরে।অবিক্রিত মাশরুম ও নষ্ট করেন না তিনি , রোদে শুকিয়ে কেজি প্রতি ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করেন দূরবর্তী জেলা গুলোতে। তিনি এই মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এবং ভবিষ্যতে মাশরুম এর বীজ গবেষণা ল্যাব স্থাপনের ইচ্ছা প্রেষণ করেন।
বর্তমানে রফিকুলের খামারে ৫০০ টির অধিক মাশরুমের স্পন প্যাকেট রয়েছে, এ থেকে তিনি প্রায় ৪০০-৫০০ কেজির মত মশরুম উত্তোলনের লক্ষমাত্রা নিয়েছেন।
চাষী রফিকুল এর পাশাপাশি মাশরুম দিয়ে আচার তৈরি করছেন। তিনি বলেন “আচার আমাদের সবার পছন্দ। একটু বৃষ্টি পড়লেই যেন খিচুড়ি খাওয়ার ধুম পড়ে যায় আর সাথে চাই আচার। আর মাশরুম দিয়ে তৈরি আচারের মাশরুমের গুণাগুণ সর্বদা অটুট থাকে। সাধারণত ছোট-বড় সব বয়সের মানুষ আচার পছন্দ করেন”মাশরুমে আছে ২৫-৩৫% প্রোটিন। আছে চর্বি শর্করা। যা রোগ প্রতিরোধ করে। পুষ্টিগুনের পাশাপাশি ঔষধী গুন হল, আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, মিনারেল যা শরীরের জন্য উপকারী। মাশরুম ডায়াবেটিস রোগের মহৌষধ।
রফিকুল আরও জানান, সরকারি সহযোগিতা ও সহজ শর্তে ঋণ পেলে তিনি এই চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি করতে চান।
কালীগঞ্জ কৃষি অফিসের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হুমায়ূন কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে জানান, স্থানীয় ভাবে মাশরুম চাষীদের আর্থিক সহযোগিতা না করতে পারলেও বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে কৃষি অফিস চাষীর সাহায্য করে যাচ্ছেন।