ঝিনাইদহে বাস উল্টে নিহত ১১ আহত ১৫
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১১ জন। নিহতদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় মিলেছে। যশোর এমএম কলেজ কেন্দ্রর মাষ্টার্স শেষ বর্ষে ছাত্র কালীগঞ্জ উপজেলা সুন্দরপুর গ্রামের ইসহাক মন্ডলের ছেলে মোতাফিজুর রহমান কল্লোল, একই উপজেলার বাটপাড়া গ্রামের রনজিত দাসের ছেলে সোনাতন দাস, চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার আব্দুর রশিদের মেয়ে রেশমা খাতুন,ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নাথকুন্ডু গ্রামের অহেদ আলীর ছেলে ইউনুচ আলী, চুয়াডাঙ্গার নাগদা গ্রামের অলিউল আলম শুভ এবং বাস চালক মাগুরার উজ্জ্ল হোসেন।শৈলকুপার উপজেলার বগুড়া গ্রামের আব্দুল আজিজ (৭৫)।সব শেষ মারা গেছেন কোটচাদপুরের হরিন্দিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদ সোহাগ।ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে স্বজনদের কাছে তাদের মরদেহ হস্থান্তর করা হয়েছে।
এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে একে একে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্থাস্তর করা হয়।এখনো ৩ জনের মরদেহ কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।এখবর নিশ্চিত করেছে কর্তব্যরত এসআই জীবন ।
হতাহতের বেশীর ভাগই ছাত্র-ইটভাটার শ্রমিক।জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান আহতর সংখ্যা ১৫ জনের বেশী। ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন ৯ জন।পরে হতদের মধ্যে মারা গেছেন আরো দুইজন। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাড়াল ১১ জনে। এর মধ্যে ৭ জন পুরুষ এবং দুইজন নারী ও একজন শিশু রয়েছেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের কুড়ি হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসন থেকে করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজারের কাছে পিরোজপুর তেল পাম্পের সন্নিকটে ট্রাকের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে ঘটনাস্থলেই উল্টে পড়ে যাত্রীবাহি বাস মাগুরাগামী জেকে পরিবহণ। ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক শামিমুল ইসলাম জানান, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা জেকে পরিবহণের বাসটি ঘটনাস্থলে আসার পরে বিপরিত দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে দ্রুত গতিতে পাশ কাটানোর চেষ্টা করে। এ সময় অপর আরেকটি ট্রাক বাসটিকে ধাক্কা মারে। এতে বাসটি সড়কের উপর দুমড়ে মুচড়ে উল্টে পড়ে। বাসের সামনে ও মাঝের অংশ সম্পূর্ণ বিধস্ত হয়ে যায়। তিনি আরো জানান খবর পেয়ে কালীগঞ্জ ও ঝিনাইদহের দমকল বাহিনীর সদস্যরা বাসের ভিতর থেকে প্রথমে ৯টি লাশ উদ্ধার করেন। এরপর আহতদের পাঠানো হয় যশোর মেডিকেল ও কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। যশোর যাওয়ার পথে বারাবাজার গরীব শাহা ক্লিনিকে মারা যান আরো একজন। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘটনার সময় তারা কাছাকাছি বারবাজার বাজারের একটি রাজনৈতিক সভায় ছিলেন। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সং সদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারসহ নেতা কর্মিরা দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। উদ্ধার কাজে অংশ নেন তারা। সেই সাথে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়াসহ পুলিশ সদস্যরা যোগ দেন উদ্ধার কাজে। চেয়ারম্যান বলেন , নিহত নয় জনই বাসের ভিতরে একটি স্থানে স্তুপাকারে পড়ে ছিলেন। কারো নাড়ি ভুড়ি বের হয়ে গেছে বলে দেখেন তিনি।
জেলা প্রশাসক জানান, নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কুড়ি হাজার টাকা ও আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহণ করবে সরকার। তিনি আরো বলেন বাসটি দ্রুত গতিতে চালানোর কারনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিআরটিএ এর পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।
ঘটনার পরে সড়কটি দিয়ে সব ধরনের যানবাহণ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টার দিকে যশোর পুলিশ লাইনস থেকে উদ্ধার যান ( র্যাকার কার) বাসটি উদ্ধার করেন। এ উদ্ধার কাজ চলার সময় মহাসড়কটিতে কয়েক কিলোমিটার যান জটের সৃষ্টি হয়। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হী অফিসার সূর্বণা রানী সাহা জানান ৬টা থেকে সড়কটি দিয়ে যানবাহণ চলাচল শুরু করেছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কালীগঞ্জু উপজেলার তৃলোচনপুর গ্রামের তানজিন শিরিন জানান,বাসটিতে কমপক্ষে ২২ জন মার্ষ্টাস পরীক্ষা দিয়ে যশোর থেকে বাড়ি ফিরিছলেন। তিনি জানান হঠাৎ করে বাসটি একটি ট্রাকের পাশ কাটানোর চেষ্টা করে। এসময় বাসটি উল্টে যায়। এর বিশেী কিছু মনে নেই তার। ইটভাটা শ্রমিক আহত খানজাহান আলী বলেন,বাসের চালক দ্রুত গতিতে সামনের দিক আসা ট্রাকে আঘাত করে এবং তাদের বহণ করা বাসটি উল্টে যায়। জ্ঞান হারান তিনি। পরে দেখেন তার উপর লাশ।