ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২/পরিবারে চলছে শোকের মাতম
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১২ জনে। এদের মধ্যে ৫ জনই যশোর এমএম কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। কলেজে পরীক্ষা শেষে তারা বাড়ি ফিরছিল।
তারা হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের রনজিত দাসের ছেলে সনাতন দাশ (২৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে রেশমা (২৬), কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিনদিয়া গ্রামের হারুন অর রশিদ সোহাগ (২৫), কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের মুস্তাফিজুর রহমান কল্লোল (২৪) সদর উপজেলার নাথকুন্ডু গ্রামের ইউনুস আলী (২৬)।
নিহত প্রত্যেকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শিক্ষা জীবনের শেষ পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তাদের।
কালীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাটপাড়া গ্রামের সনাতন দাশের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকেত মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর বাবা-মা। রাজমিস্ত্রীর কাজ করে ছেলেকে পড়ালেখা করিয়েছিলেন বাবা রনজিৎ দাস। বাবা রনজিৎ দাস বলেন, খুব কষ্ট করে ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছি। খেয়ে না খেয়ে তার খরচ দিচ্ছিলাম। একদিন সে চাকরি করে অভাব ঘুচাবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের নিহত মুস্তাফিজুর রহমান কল্লোলের ভাই নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের বড় আশা ছিল ভাইকে নিয়ে। বড় আশা করে তাকে লেখাপড়া শিখানো হয়েছে। চালকের অসচেতনতায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তার। আমার পরিবারের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল।
দুলাভাই আলমগীর কবির বলেন, পরিবার ও সরকার এত টাকা খরচ করে তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছে। গাছটি লালন পালন করে মাত্র ফুল ফুটেছে। সে থেকে ফল পাওয়ার আশা ছিল প্রত্যেকের। সেই ফুল অকালে ঝড়ে গেল। এ দায় ভার কার।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকায় যশোর থেকে মাগুরা গামী জিকে পরিবহনের একটি বাস বিপরীত থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহি বাসটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার উপর আড়াআড়ি হয়ে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন ও পরে ৩ জন মারা যায়। আহত হয় অন্তত ১৫ জন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, নিহতদের ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।