কালীগঞ্জে অগ্নিকান্ডে ২ ব্যবসায়ীর দোকান পুড়ে ছাই
মোঃ হাবিব ওসমান, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার টু হাকিমপুর রোডের সাদিকপুর ধর্মতলা বাজারের ২টি দোকানে অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে একটি গার্মেন্টের দোকান ও একটি সেলুনের দোকান। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডে এ ২টি দোকানের মালামার পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ১১ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকদের।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল-২১) ভোরে উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের ধর্মতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় গার্মেন্টস মালিক দেবেন্দ্র দাসের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১০১৯ সালে জমি, গরু বিক্রি ও বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা চালু করেন। কিন্তু ঋণ পরিশোধ করার আগেই তার স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখনও চলছে লোনের কিস্তি। পুনরায় ব্যবসায় দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই তাদের। চোখের সামনেই সাজানো স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গ্রামীন এলাকাতে আর কোন গার্মেন্টেসের দোকান না থাকাতে ভালোই চলছিল কাপড়ের ও সেলুনের দোকান। এ ২টি দোকান আপন দু’ভায়ের। তাদের নাম দেবেন্দ্র দাস ও রুবেন দাস।
অল্পদিনেই দাড়িয়ে গিয়েছিল ব্যবসাটা। দেবেন্দ্র উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের সাদিকপুর গ্রামের মৃত অনিল চন্দ্র দাসের ছেলে। এই দোকানের উপর নির্ভর করে চলতো তার ৬ সদস্যের সংসার। তার বড় ছেলে তাপস দাস প্রতিবিন্ধ, বয়স ১৫ বৎসর, নবম শ্রেনীতে পড়াশুনা করে স্থানীয় এক প্রতিবন্ধি স্কুলে। ছোট লিখন দাসের বয়স ১১ বছর।
স্থানীয়রা জানান, দেবেন দাস খুবই নিরীহ একজন মানুষ, সে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দোকানটি চালু করেছিল। গ্রামীন গার্মেন্টসের দোকান হলেও বেচা-কেন হতো ভালো। এজন্য অল্পদিনেই দোকানে উন্নতি দেখা দিয়ে ছিল। কিন্তু আগুনে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। এই দোকানের উপর নির্ভরকরে চলতো তার সংসার, সন্তানদের পড়াশোন ও খাওয়া দাওয়া চলতো এই গার্মেন্টসের দোকানের ব্যবসার উপর্জনের টাকা দিয়ে।
দোকান ২টি পুড়ে যাওয়ায় পুরো পরিবারটি এখন নির্বাক। চোখে মুখে হতাশার চিহ্ন। এই অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে দেবেন্দ্রর আপন ছোট ভাই রুবেন দাসের সেলুনের দোকান। তিনি জানান আমার ৪ সদস্যের সংসার চলে এই সেলুনের দোকানের আয়ের টাকায়। দিন আনা, দিন খাওয়া আমার সংসার। যেদিন কাজ না হয়, সেদিন আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়। এক কেজি চাউলও নাই আমাদের ঘরে। স্থানীয় এনজিও ব্যুরো বাংলা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋন এবং ৪ ট্ াছাগল বিক্রয় করা টাকা দিয়ে আমার এই সেলুন করা। এখন চলছে এনজিওর কিস্তি। পরিবার নিয়ে না খেয়ে মৃত্যু ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন রাস্তা নেই। এজন্য আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশসন ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সূ-দৃষ্টি কামনা করছি।
কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার ডা: শেখ মামুনর রশিদ বলেন বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। খবর পেয়ে আমরা দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌছায়ে ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। এরমধ্যেই মালামালসহ ১ টি গার্মেন্টের দোকান ও ১ টি সেলুনের দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ হতদরিদ্র এই দুই ব্যবসায়ীর পাশে দাড়ানোর জন্য সমাজের বৃত্তবান, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সু-দৃষ্টি কামনা করেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও এলাকার সাধারন মানুষ।