করোনাকালে ঝিনাইদহ হাসপাতালে রোগী-স্বজনদের সেহেরি বিতরণ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন
ঝিনাইদহের চোখ-
১ম রোজা থেকে গভীর রাতে একদল যুবক নিজ উদ্যগে হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের সেহরী বিতরণ করছে। করোনা পরিস্থিতিতে রাতে হোটেল বন্ধ ও জেলার দুর-দুরান্ত থেকে আসা মানুষগুলো যখন কী খেয়ে রোজা করবে তখনই তাদের পাশে এসে দাড়িয়েছে মাত্র ১০ দলের যুবকরা। গভীর রাতে সেহেরী পেয়ে অসহায় এ মানুষগুলো খুশিতে আত্মহারা।
গভীর রাত। ঘড়িতে বাজে রাত ২টা। চলছে রান্নার পাশাপাশি খাবার প্যাকেটের কাজ। চরম ব্যস্ততা কারণ রাত সাড়ে ৩টার মধ্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দুঃস্থ, অসহায় মানুষগুলো যেন না খেয়ে রাজা রাখতে হয়। এমন কাজ করছে ঝিনাইদহের ১০জন যুবক। রান্নার স্থান থেকে হাসপাতাল দূর হওয়ার কারণে এক এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার তাদের খাবার পৌছে দিচ্ছে হাসপাতালে। সেহেরির প্যাকেট হাতে হাসপাতালের করোনা ইউনিটসহ প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে চলছে বিতরণ। করোনা পরিস্থিতিতে বাসায় রান্না করা খাবার বক্সে এনে দেয়া হচ্ছে তাদের। প্রতিদিন রাত ১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে তাদের এ কার্যক্রম।
স্বেচ্ছাসেবক যুবক আব্দুল্লাহ বলেন, সদস্যদের টাকায় কেনা হয় বাজার। এরপর ঘরেই রান্না করা হয়। সাদামাটা আয়োজনে থাকে খিচুড়ি, কোনো দিন আবার সাদা ভাত, ডাল আর মুরগির মাংস। সঙ্গে বোতলজাত খাবার পানি। নিজ উদ্যগে প্রতিদিন তারা ১০০-১২০ জন রোগী ও স্বজনদের খাবারের ব্যবস্থা করছেন। এতে তাদের প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
গত ১০ দিন ধরে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি জেলার শৈলকুপা থেকে আগত রুকসানা বেগম জানান, তিনি ও তার স্বজনরা জানতেন না সাহরিতে কী খাবেন। কিন্তু যুবকদের এনে দেয়া খাবার পেয়ে তারা খুব খুশি।
সমন্বয়কারী এবং নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠক শামীম আহম্মেদ টফি জানান, রাত ১০টার পর আমাদের একটি দল করোনা ইউনিটসহ প্রতিটি ওয়ার্ডে যেয়ে টোকেন দিয়ে আসে। আমরা সে অনুপাতে ২০টি প্যাকেট বাড়তি করে মোট প্যাকেট তৈরী করি।
তিনি আরো জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা নিয়মিত খাবার পেলেও সঙ্গে থাকা স্বজনদের বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনায় শহরের সব হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে। দূর-দূরান্তের রোগীর স্বজনরা সাহরি খেতে পারেন না। তাই রোজার সময় তাদের সাধ্যমতো সাহরি বিতরণ করছেন।