ঝিনাইদহে আমন ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ/রক্ষায় কীটনাশক স্প্রে কৃষকদের
মনজুর আলম, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহে আমন ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা গেছে। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কৃষক কীটনাশক বিষ ছিটানো সহ নানা পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, প্রতিবছরই ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ কম বেশি দেখা যায়। এ বছরও আক্রমণ দেখা গেছেে। তবে তা ক্ষতির পর্যায় পৌঁছায়নি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর কৃষক আমিরুল হোসেন জানান, ধানক্ষেতে সাধারণত দুইবার মাজরা পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে। জমিতে ধানের চারা রোপণের ২৫ থেকে ৩০ দিন পর প্রথমবার আর ধানে থোড় আসার সময় দ্বিতীয়বার।
সাধারণত প্রথমবার আক্রমণ হলে ধানের মাইজ বা মরাডিগ দেখা যায়। এ সময় কীটনাশক সহ জমিতে ডাল পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে উপকার পাওয়া যায়। আর দ্বিতীয়বার যখন আক্রমণ করে বুঝা যায় শীষ বের হওয়ার পর, এই সময় সাদা শীষ দেখে বুঝা যায় মাজরা পোকা আক্রমণ করেছিল। তখন স্প্রে বা কীটনাশক ছিটিয়ে মাজরা পোকার জন্য কোন উপকার পাওয়া যায় না। তবে দ্বিতীয়বার জমিতে বিভিন্ন প্রজাপতি বা পোকা উড়ে বেড়াতে দেখলে স্প্রে করলে বা ডাল পুঁতে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মিয়া জানান, ধানের জমিতে মাজরা পোকা ছাড়াও শীষ বের হওয়ার পর গান্ধী পোকা, ফড়িং, বাদামী গাছ ফড়িং ( স্থানীয় ভাষায় কারেন্ট পোকা) এর আক্রমন দেখা দিয়ে থাকে।
পাশের ডেফলবাড়ি গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, ধানের জমিতে পোকার আক্রমণ ছাড়াও পঁচা রোগের আক্রমণ দেখা যায়। সাধারণত খোল পঁচা, খোলপুড়া, ধানের শীষ কালো হয়ে, ঘাড় ভেঙে পড়া সহ নানান ধরনের রোগের আক্রমণ দেখা যায়। এসব কারণে ফলনও অনেকটা কমে যায়।
একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা ধানের পোকা, পঁচাসহ যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার নিকট না গিয়ে, তারা হাটবাজার গুলোর সার-কীটনাশক দোকান গুলোর দিকে ঝুঁকে পড়েন। ঐসকল দোকানী যে পরামর্শ দেন সেই পরামর্শেই কীটনাশক বিষ কৃষকগণ জমিতে ছিটাতে বা স্প্রে করতে শুরু করেন। এতে অনেক সময় কৃষক প্রয়োজনমতো সমস্যা সমাধান না পেয়ে হতাশ হন।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, জেলাতে ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। ধানে এখন থোড় পর্যায়ে আছে। তাদের হিসাব মতে জেলাতে ৫৫ হেক্টর জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা গেছে। যা ক্ষতিসাধন হয়েছে বলা যাবে না।
সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরও জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা খুন কাজ করছেন। তারা কৃষকদের ধান ক্ষেতে পোকা দমনের জন্য পার্চিং পদ্ধতি এবং কীটনাশক বিষ স্প্রে করারও পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে পোকার আক্রমণে ক্ষতিসাধন হয়েছে তা বলা যাবে না। সাধারণত ৫ শতাংশ ফসল পোকার আক্রমণে নষ্ট হলে তা ক্ষতির পর্যায়ে পৌঁছে।