ব্যতিক্রমী মেয়ে ঝিনাইদহের অর্থি জিতেছেন ১১ বার জাতীয় পদক
ঝিনাইদহের চোখ-
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পেয়েছেন গোল্ডেন এ প্লাস। লেখাপড়ার পাশাপাশি সংগীতেও সুনাম কুড়িয়েছেন। ২০১৩ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ও জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় পেয়েছেন ১১ বার জাতীয় পদক।
এরই মধ্যে ৮টি স্বর্ণপদক ও ৩টি রৌপ্যপদক। ২০১৩ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় উচ্চাঙ্গসংগীতে স্বর্ণপদক, ২০১৪ সালে রবীন্দ্র, নজরুল ও উচ্চাঙ্গসংগীতে তিনটি স্বর্ণপদক পান। একই বছরে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুবর্ণজয়ন্তীতে উচ্চাঙ্গসংগীতে স্বর্ণপদক পান।
২০১৬ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতায় উচ্চাঙ্গসংগীতে স্বর্ণপদক, ২০১৭ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় নজরুল সংগীতে স্বর্ণপদক এবং ২০১৯ সালে সে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় উচ্চাঙ্গসংগীতে স্বর্ণপদক পান। অর্থি ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী।
ঝিনাইদহের মেয়ে তানজিম তাবাচ্ছুম অর্থির (২০) স্বপ্ন দেখেন লেখাপড়া সম্পন্ন করে বিসিএস ক্যাডার হবেন। এ প্রসঙ্গে তানজিম তাবাচ্ছুম অর্থি বলেন, লেখাপড়া, সংগীত দুটিই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। লেখাপড়ার পাশাপাশি সংগীত সাধনাটাও চালিয়ে যেতে চাই।
তানজিম তাবাচ্ছুম অর্থি ঝিনাইদহ শহরের মদনমোহনপাড়ার বাসিন্দা। তার বাবা মো. পারভেজ ইমাম হরিণাকুণ্ডু সালেহা বেগম ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক।
মেয়ের এ সাফল্যে বাবাও গর্বিত। বাবা পারভেজ ইমাম মেয়েকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করছেন। এক সাংস্কৃতিক পারিবারিক আবহে বেড়ে ওঠায় অর্থি শৈশবে লেখাপড়ার পাশাপাশি সংগীতচর্চায় মনোযোগী হন।
তানজিম তাবাচ্ছুম অর্থির মতে, ৮ বছর বয়সে আমার সংগীতে হাতেখড়ি। সংগীত শেখার পেছনে বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি। বাবা সব সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। বাবা সংগীত অনুরাগী হলেও পারিপার্শ্বিক কারণে নিজে শিখতে পারেননি। বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বাবা তার স্বপ্ন আমার মাধ্যমে দেখতে চেয়েছিলেন। সংগীত শিক্ষক কুষ্টিয়ার মোতালিব বিশ্বাসের কাছে প্রথম তালিম নেই। ঝিনাইদহের জাকির হাসান রুমির কাছে দুই বছর তালিম নেই। এরপর সংগীত শিক্ষক অজয় দাসের কাছে তালিম নেই। পাশাপাশি ভারতের সংগীতজ্ঞ তাপস দত্তের কাছেও তালিম নেই।
তিনি আরও বলেন, সংগীতের মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরতে চাই। সংগীতকে ধারণ করতে চাই। রশীদ খান, অজয় চক্রবর্তী এবং প্রিয়াংকা গোপের শাস্ত্রীয় গান বেশি শুনি।
তানজিম তাবাচ্ছুম অর্থি ২০১৮ সালে ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২০ সালে সরকারি নুরুন্নাহার কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে ইচ্ছুক।
ভারতের প্রবীণ সংগীত শিল্পী তাপস দত্ত জানান, নিঃসন্দেহে অর্থি সংগীতে অনেক পারদর্শী। যে কোনো গান বা সুর সহজে আয়ত্ত করতে পারে। একদিন অর্থি অনেক বড় গায়িকা হবে।
বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী ও নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা জানান, অর্থি একজন প্রতিশ্রুতিশীল গায়িকা। ও সংগীতের পুরো থিম বুঝে গান করে। এ গুণটাই তাকে ভবিষ্যতে একজন বড় গায়িকা তৈরি করবে।