ঝিনাইদহের চোখ-
গঞ্জের আলী কৃষক হলেও তার নিজস্ব কোনো জমি নেই। সম্পদ বলতে নয়টি গরু। সারা বছর পালন করে ১ টা ২টা করে গরু বিক্রি করেই চলত তার সংসার। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই তাই সন্তানের মত করে লালন করতেন গরুগুলোকে। কিন্ত মঙ্গলবার গভীর রাতে গোয়াল থেকে গঞ্জের আলীর সাতটি গরু চুরি হয়ে যায়। আয়ের একমাত্র পথ হারিয়ে শূন্য গোয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে এখন চোখের পানি ফেলছেন গঞ্জের আলী আর তার স্ত্রী।
ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ফয়লা গ্রামের। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের স্ত্রী সিনু বেগম বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক গঞ্জের আলী জানান, মঙ্গলবার রাতে গরুগুলোকে খেতে দিয়ে তারা ঘুমাতে যান। ভোর চার টার দিকে বের হয়ে দেখেন গোয়ালের সাতটি গরুই নেই। শুধু ছোট দু’টি বাছুর আছে। বাড়ির মূলফটকও আলগা করা।
তিনি আরও জানান, সড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় চোরেরা গরুগুলো পিকআপে তুলে নিয়ে গেছে।
গঞ্জের আলী জানান, ভোরের দিকে এক রিকশাওয়ালা পাশের নরেন্দ্রপুর গ্রামে যাচ্ছিল। এ সময় চোরেরা তাকে ধরে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে, মুখে কাপড় দিয়ে রাখে যাতে সে হৈ চৈ করতে না পারে। সকালে ওই রিকশাচালক তাকে জানান, চোরেরা মুখোশ পরে বড় বড় ধারালো দা ও দেশি অস্ত্রপাতি নিয়ে গরুগুলো পিকআপে তুলে নিয়ে যায়।
গঞ্জের আলীর দাবি, গরু চুরির ঘটনায় তাদের প্রায় ৬ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
গঞ্জের আলীর প্রতিবেশি জিল্লুর রহমান জানান, চোরেরা প্রাচীর ডিঙিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকেছে। এরপর বাড়ির গেটের হুক কেটেছে। কোনো শব্দ হওয়ার ভয়ে বাড়ির বাইরে থাকা কাপড় দিয়ে গরুগুলোর মুখ বেঁধে পিকআপে তুলে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, গঞ্জের আলী অত্যন্ত গরীব কৃষক। এখন তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানান, গরু চুরির ঘটনাটি সত্য। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।