ঝিনাইদহের হিজড়া কারিশমা হত্যার জট খুলতে শুরু করেছে
ঝিনাইদহের চোখ-
জট খুলতে শুরু করেছে ঝিনাইদহের হিজড়া কারিশমা হত্যার রহস্য। ঝিনাইদহ পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিক লিয়াকত ওরফে কারিশমা নামের এক ব্যক্তির।
এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও পুলিশ হত্যার মোটিভ উদ্ধার করতে পারছিল না। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় অবশেষে চূড়ান্ত অগ্রগতি সাধন করে ক্লু উদ্ধার করেছে পিবিআই।
এজাহার সূত্রে জানাগেছে, লিয়াকত ওরফে কারিশমা সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত সুলতান মাস্টারের ছেলে। ৬ ভাই ২ বোনের মধ্যে লিয়াকত ওরফে কারিশমা সবার ছোট। ১৬ বছর আগে সে হিজড়ার দলে নাম লেখায়। ১৩ বছর আগে জনৈক কামাল মন্ডলের নিকট থেকে জমি কিনে পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিল একায়। বছর দুয়েক আগে গোয়ালপাড়ায় একটি জমি কিনে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছে। স্থায়ীভাবে গোয়ালপাড়ার এই বাড়িতে বসবাসের জন্য উদয়পুর গ্রামের এই বাড়িটি বিক্রি করে দিতে গোবিন্দপুর গ্রামের কামরুল ইসলামের স্ত্রী কাজলের কাছ থেকে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকাও গ্রহণ করে। এই সময়ে কারিশমা হিজড়ার বর্ষা হিজড়ার সাথে দ্বন্দ্ব চলছিল। এই দ্বন্দ্ব নিয়ে মানসিকভাবে চাপে ছিল কারিশমা। এই কথা লিয়াকত ওরফে কারিশমা তার বোন শাহানারাকেও জানায়। এরই মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় ৯ সেপ্টেম্বর সকালে উদয়পুরের বাড়ি থেকে লিয়াকত ওরফে কারিশমার মরদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। থানায় মামলা রেকর্ড হওয়ার পরে তদন্ত করেন ওসি অপারেশন শেখ আবুল খায়ের। পরে মামলা পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক একেএম মনিরুজ্জামান পরে মামলা তদন্তভার নেন। তিনি এই মামলায় গত ২৭ অক্টোবর সন্দেহভাজন ৬ জনকে গ্রেফতার করেন। পরে তথ্য যাচাই করে ৩ জনকে ছেড়ে দেন এবং বাকী তিনজনকে আদালতে পাঠান। তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন আদালতে কিন্তু বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে পাঠানো তিন আসামি হলো উদয়পুর বিশ্বাস পাড়ার আব্দুল কুদ্দুস মোল্লার ছেলে মোঃ রাজন মিয়া(৩৫), উদয়পুর গ্রামের শাহ পাড়ার লতাফত শাহ’র ছেলে আনোয়ার হোসেন শাহ(৪০) এবং উদয়পুর বিশ্বাস পাড়ার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে মিন্টু মিয়া ওরফে লম্বা মিন্টু। ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে পূণরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বিজ্ঞা আদালতের মাধ্যমে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখ ঝিনাইদহ সদর থানায় ৩০২/ ৩৪ ধারায় অজ্ঞাত নামে মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মোঃ আয়ুব আলী।
পিবিআই’র পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান জানান, এটি একটি ক্লুলেস মার্ডার ছিল। কিন্তু পিবিআই মামলার তদন্তে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। এই ঘটনায় ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও পলাতক আসামি রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের ব্যাপারে আমরা বলতে পারছি না। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদেরকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে হত্যার পুরো রহস্য জানাযাবে।