ঝিনাইদহে উন্নত জাতের পাট বীজ নিয়ে নতুন সম্ভাবনা/লাভবান হচ্ছে কৃষকরা
মোমিনুর রহমান মন্টু, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের উচ্চ ফলনশীল জাতের রবি-১ জাতের পাট বীজ উৎপাদন করছে কৃষকরা। নতুন জাতের এই পাট সাধারন তোষা জাতের পাটের চেয়ে কমপক্ষে ২০ শতাংশ বেশি ফলন পাচ্ছে কৃষকরা। ১১০ দিনেই এই পাট থেকে বীজ সংগ্রহ করা যায়। ফলে এই পাট বীজ উৎপাদনের দিকে ঝুকছে ঝিনাইদহের কৃষকরা।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ও সিমলা রোকনপুর ইউনিয়ন এবং কোটচাদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের ৯৭ জন কৃষক এবার ১৬৮ বিঘা জমিতে এই রবি-১ জাতের পাট চাষ করে বীজ উৎপাদন করছে। এবার পায় ৭৬২ মন পাট বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতি মন বীজ বিক্রি হবে ৬০০০ টাকা দরে। ভারতীয় পাট বীজের বাজার ঠেকাতে দেশীয় বীজ উৎপাদনে নেমেছে ফেরোমন ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানী নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আর তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিস এবং ইউএসএআইডি।
সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে সাধারন ভারতীয় পাট বীজ ব্যবহার করে পাট উৎপাদন করে কৃষকরা। কিন্তু অনেক সময় ভারতীয় পাট বীজ থেকে ফলন তেমন হয় না। তখন লোকসানে পড়ে কৃষকরা। এছাড়াও ভারতীয় বীজের অনেক দাম। তাই সোনালী আশের পুরানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে নতুন উদ্যেমে মাঠে নামে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট। তারা এই রবি ১ জাতের পাট বীজ উৎপাদন করে সফলতাও পেয়েছেন।
সম্প্রতি ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দুইটি ইউনয়িন এবং কোটচাদপুর উপজেলার একটি ইউনিয়নের ৯৭ জন চাষীকে দিয়ে এই পাট বীজ উৎপাদনের জন্য কাজ করছে ফেরোমন ইন্ডাষ্ট্রিজ কোম্পানী। তারা আশা করছে প্রতি বিঘা জমি থেকে চার মন করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলার বড় সিমলা গ্রামের জাফর আহম্মেদ নামের একজন কৃষক জানান, তিনি এবার তার এক একর জমিতে রবি-১ জাতের পাট বীজ বপন করেন। আশা করছি এক একর জমিতে প্রায় ১০-১২ মন রবি ১ জাতের বীজ উৎপাদন করতে পারবেন। ফল অনেক ভাল হয়েছে। মাত্র ১১০ দিনে তিনি তার জমি থেকে ৭০ থেকে ৭২ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। এই এক একর জমিতে তিনি খরচ করেছে আনুমানিক ১০-১২ হাজার টাকা।
ফেরোমন ইন্ডাষ্ট্রিজ এর প্রোডাকশন সুপারভাইজার জহুরুল ইসলাম জানান, এ বছর থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে দুইটি উপজেলার তিন ইউনিয়নে ৯৭ জন কৃষক এই পাট বীজ উৎপাদন করবে। পরবর্তীতে আরো কৃষককে রবি-১ জাতের পাট বীজ উৎপাদনে কৃষককে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শিকদার মোহায়মেন আক্তার জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার যে সকল কৃষক এই পাট বীজ উৎপাদন করছে তাদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এই জাতের পাট বীজ উৎপাদন করে কৃষকরা অল্প দিনেই লাভবান হবেন। এলাকায় যদি আরো বেশি পাট বীজ উৎপাদন করা যায় তাহলে আগামীতে এলাকায় আরো বেশি বেশি পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে।