ভুয়া দুদক কর্মকর্তা সেজে ঝিনাইদহ ডাক্তারকে ব্ল্যাকমেইলিং/অবশেষে গ্রেপ্তার
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর খুলনা দুদক অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ফোন করেন এক যুবক।
দুদকে অভিযোগ হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হবে- এমন কথাও জানানো হয় মোবাইল ফোনে। এরপর অভিযোগ খারিজ ও গ্রেপ্তার এড়াতে বিকাশ, নগদ ও রকেট নম্বরে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা দেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লুবনা। এরই মধ্যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে টাকা উদ্ধারে গত ৫ নভেম্বর কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন লুবনার স্বামী ডা. আব্দুল্লাহিল কাফী।
মামলার এজাহারে আব্দুল্লাহিল কাফী উল্লেখ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জুন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামীমা শিরিন লুবনার ফোনে ফোন দেন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক। তিনি নিজেকে খুলনা দুদক অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দেন এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ হয়েছে বলে জানান। এরপর ওই অভিযোগ খারিজ করে দেবেন বলে দেখা করতে বলেন ও ৫০ হাজার টাকা দিলে কোনো সমস্যা হবে না বলেও জানান। এ ছাড়া টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্ত্রীর চাকরির ক্ষতি ও গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান তিনি। এ অবস্থায় আত্মসম্মানের ভয়ে তার স্ত্রী একটি নম্বরে বিকাশ, রকেট ও নগদ অ্যাকাউন্টে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা দেন। পরে জানতে পারেন, তিনি ভুয়া দুদক কর্মকর্তা।
কালীগঞ্জ থানার এসআই জাকারিয়া মাসুদ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গত শনিবার পুলিশ ময়মিনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পরশিপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শরীফ মিয়া নামে ওই ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে আটক করেছে। এ সময় তার কাছ থেকে ৭৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর বিভিন্ন দৈনিকে করোনাকালীন অর্থ তছরুপসহ বিভিন্ন অনিয়মের খবর প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় হৈচৈ পড়ে যায় স্বাস্থ্য বিভাগে। এরপর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্তে টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণ পাওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদনটি পাঠানো হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডা. লুবনাকে বদলি করা হয়।