অশ্লীল ভিডিও জন্যই মার্ডার হয় ঝিনাইদহের রিয়াদ (ভিডিও)
এসএম রায়হান উদ্দীন, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নৃশংস ভাবে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত মিলন দাশ (২১) কে আটক করেছে কোটচাঁদপুর থানা পুলিশ। বুধবার রাত ৯ টার দিকে প্রযুক্তির (মোবাইল ট্রাকিং) মাধ্যমে বাগডাঙ্গা রাস্তা পাড়া বাড়ির পাশ থেকে তাকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে এক প্রেস ব্রিফিং এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কোটচাঁদপুর সার্কেল) মোহাইমিনুল ইসলাম।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, আটক মিলন দাশ উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের সলেমান আমিনের ছেলে স্কুল শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন খুনের প্রধান আসামী। বুধবার রাতে সে বাগডাঙ্গা গ্রামের ঝিঁনুর আম বাগানের পাশে রিয়াদকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে কপোতাক্ষ নদে ফেলে দেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে খুনের রহস্য ও লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন আসামী মিলন দাশ।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আসামী মিলন দাশ ও ভিকটিম রিয়াদ খাঁন এক সঙ্গে মাদক সেবন করে। সে সুবাদে আসামীর মা অঞ্জলি দাশের সঙ্গে জৈনক এক ব্যাক্তির অনৈতিক ও অসামাজিক একটি ভিডিও ধারন করে রিয়াদ খাঁন। দীর্ঘদিন ধরে সেই ভিডিও দেখে আসামী মিলনকে বøাক মেইল করে আসছিল রিয়াদ। মিলন সে ভিডিওটি রিয়াদকে ডিলেট করতে বলে। এরপরও ভিকটিম সেই ভিডিওটি ডিলেট না করে তাকে নানা ভাবে বøাক মেইল করছিল। এতে সে রিয়াদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এবং তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার কথা ভাবে। যার ফলশ্রতিতে বুধবার রাতে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং লাশ পানিতে ভাঁসিয়ে দেয়।
যে ভাবে হত্যাকরা হয়ঃ
হত্যার পরিকল্পনায় আসামী মিলন দাশ তার মায়ের ব্যবহৃত একটি দা চৌকাঠে ধার দিয়ে ঘটনাস্থলে রেখে আসে। হত্যার রাতে সে রিয়াদকে মাদক সেবনের জন্য ডেকে নেয়। রাত ৯ টার দিকে আসামী ও ভিকটিম দু’জনেই মাদক সেবন করে এবং রিয়াদকে অতিরিক্ত মাদক সেবন করাই। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত সেবনে রিয়াদ অচেতন হলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। এসময় রিয়াদ শরীরের শক্তি দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালাই ও দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ জানায়, মিলন দাশের ধারালো দায়ের কোপে রিয়াদের একটি হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে রিয়াদ দূর্বল হয়ে পড়ে মাটিতে লুটে পড়ে। আসামী মিলন দাশ রিয়াদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাকে জবাই করে এবং মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে পানিতে ফেলে রাখে। পরদিন সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এঘটনায় নিহতের পিতা সলেমান খান বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-৪, ২২/১২/২১। পরে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার মূল আসমী মিলন দাশকে আটক করে।
আটক মিলন দাশ উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের রাস্তা পাড়ার মৃত মুকুল দাশের ছেলে, সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। প্রেস বিফিংএ উপস্থিত ছিলেন, থানার অফিসার ইনচার্জ মঈন উদ্দিন, ওসি (তদন্ত) ইমরান আলম, সেকেন্ড অফিসার আব্দুল মান্নান।