ঝিনাইদহের সুপার ট্যালেন্ট সাদ ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী অথবা শিক্ষাবিদ হতে চায়
ঝিনাইদহের চোখ-
ডাক নাম সাদ। পুরো নাম সামিউন আলীম সাদ। ২০২২ সালে বয়স মাত্র সাড়ে সাতে পড়লো। এ বছরই সে তৃতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ স্কুলের বেসরকারি একটি শিশু এডাডেমিতে।
সাদ এর মা শহীদ নুল আলী কলেজের প্রভাষক আয়েশা আক্তার চার্লী জানান, ২০১৪ সালের ৬ জুলাই জন্ম নেয় সাদ। সন্তানদের মধ্যে সে দ্বিতীয় এবং একমাত্র পুত্র সন্তান। মত্র ২ বছর বয়সেই শোনামাত্রই যে কোনো মোবাইল নম্বর বলে দিতে পারত সে। বর্তমানে সে আঁকতে পারে বিশ্বের যে কোন দেশের ম্যাপ। বলে দিতে পারে অবস্থান। ব্যাখ্যা করতে পারে ভূমি, পাহাড়, পর্বত, সাগর-মহাসাগর সম্পর্কে। সাদ মূলত পড়াশোনা করে ল্যাপটপ, মোবাইল ও ইউটিউব নিয়ে।
স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক এসএম মিজানুর রহমান জানান, সাদের বাবা গতবছর করোনাকালীন সময় তার কাছে সাদ কে নিয়ে আসেন। তিনি শুরু করেন সাদ এর মেধার যাচাই। সাদের সঙ্গে ত্রিকোণমিতিসহ অংক শাস্ত্রের জটিল সূত্র এবং সমাধান নিয়ে কথা হয়। নবম-দশম শ্রেণির জটিল অংকের সহজ সমাধান করে দেয় সাদ। অবাক হয়ে যান মিজানুর রহমান।
কালীগঞ্জ উপজেলার সরকারি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজের ইংরেজি শিক্ষক মো. সুমন শাহরিয়ার জানান, সাদ সুপার ট্যালেন্ট বয়। সে আমেরিকা ও ব্রিটিশ উচ্চারণে নির্ভুল ইংরেজিতে দ্রুত কথা বলতে পারে। শুধু বলতে পারদর্শী তা নয়, লিখতেও পারে সে। ইউটিউবে শিক্ষামূলক নানা দিক তুলে ধরে লেকচার দেয় সাদ।
সাদ এর একমাত্র বোন সামিয়া আলীম প্রমি জানান, সে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে সাদ’র। যার নাম ইংরেজীতে সামিউন আলীম সাদ। শিক্ষা বিষয়ে অন্তত ৬০টি ভিডিও ওই চ্যানেলে আপলোড করেছে সে। সাদ তাকে সব সময় জটিল জটিল প্রশ্ন করে থাকে। চঞ্চল প্রকৃতির সাদ ঘুম থেকে উঠে পড়ালেখা শুরু করে। গভীর রাতে ঘুমাতে যায়। মোবাইল নিয়ে পড়ালেখা করতে থাকে। খাবার সময়েও পড়তে থাকে সে।
সাদ এর বাবা আলি হোসেন আলীম পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ১ম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয় সাদকে। কিছুদিনের মধ্যে করোনা মহামারি শুরু হয়। স্কুলে আর পড়া হলো না তার। তবে স্কুলের সব বই মাত্র ৩-৫ দিনের মধ্যেই শেস করে সে। হঠাৎই বায়না ধরে ল্যাপটপে ও মোবাইলে শিক্ষা বিষয়ক অ্যাপস ডাউন লোড করে দিতে হবে তাকে। ছেলের বায়না পূরণ করতে বাবা বাধ্য হয়েই কাজটি করে দেন। শুরু হয় মোবাইলে ও ল্যাপটপে পড়ালেখা। সাদ অল্পদিনে ইংরেজি রপ্ত করে ফেলে। ইসলামিক ষ্টেট, কোন দেশে কতগুলো ভাগে ভাগ করা যায়, ক্লাস নাইন-টেনের জটিল সব অংকের সমাধান, গ্যালাক্সীর বিভিন্ন দিক, ব্রিটিশ এমপায়ার, এক কথায় সবদিকে তার পারদর্শীতা।
সামিউন আলীম সাদ জানান, সে গেম বা কার্টুন দেখে সময় নষ্ট করতে চায় না। সে চায় দেশতে কিছু দিতে। নতুন কিছু । যার জন্য দেশ এগুবে। কারণ সে বাংলাদেমকে খুব ভালোবাসে। এই অপূর্ব দেশকে আরো সামনের দিকে কিভাবে এগিয়ে নিতে পারেব সে সবসময় এসবই ভাবতে থাকে।
সে ভবিষ্যতে কী হতে চায় জানতে চাইলে, হেসে বলে আমি বড় হয়ে বিজ্ঞানী অথবা শিক্ষাবিদ হবো।
সামিউন আলীম সাদ এর বাড়ী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা পৌরসভাধীন কাঁঠাল বাগানে।