কালীগঞ্জ

ঝিনাইদহে কীটনাশক স্প্রে করে ধানের চারা হত্যা

ঝিনাইদহের চোখ-
কৃষক আবু সাঈদ ৮ শতক জমিতে বীজতলা দিয়েছিলেন, চারাও হয়েছিল ভালো। আশা ছিল এই চারা দিয়ে কমপক্ষে ১২ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করবেন। যা তার বছরের অর্ধেক সময় খাওয়া আর বিক্রির মাধ্যমে সংসারে খরচ মেটাবেন। এখন তার সব আশা মুহুর্তেই শেষ হয়ে গেছে। বুধবার রাতে কে বা কারা তার বীজতলায় আগাছা মারা ঔষধ স্প্রে করে সব মেলে ফেলেছে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ফারাসপুর গ্রামের মাঠে।

ফারাসপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার এর পুত্র কৃষক আবু সাঈদ জানান, তার মাঠে ১০ বিঘা ধান চাষের জমি রয়েছে। এই জমিতে ইরিবোরো ধান গাছ রোপনের জন্য ৮ শতক জমিতে বীজ ছিটিয়েছিলেন। তার সঙ্গে তাদের গ্রামেরই ওবাইদুর রহমানের ২ বিঘা চাষের জমি রয়েছে। এক মাস হলো বীজতলা তৈরী করে সেখানে ১০০ টাকা কেজি দরে ধানের বীজ ক্রয় করে বপন করেন। গোটা জমিতে ৬০ কেজি বীজ ছিটিয়েছেন। এরপর সার দেওয়া সহ নানা ভাবে যতœ করে চারাগুলো বড় করেছেন। এগুলো করতে তার এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একটাই আশা এই চারা দিয়ে জমি চাষ করে ফসল ফলাবেন। যে ফসল তার পরিবারের লোকজনের খাবার জুটাবে পাশাপাশি কিছু ধান বিক্রি করে সংসার খরচ করবেন। কিন্তু এক রাতেই তার সব আশা শেষ হয়ে গেছে।

আবু সাঈদ জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি বীজতলায় পানি দেওয়ার জন্য গেলে দেখতে পান বস চারা লাল হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা দেখে হতাশ হয়ে পড়েন। প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না কেন এমনটি হচ্ছে। পরে শুক্রবার সকালে মাঠে গিয়ে দেখতে পান গোটা জমির ধানের চারা মারা গেছে। চারাগুলো সোনালী রং এ ধারন করেছে। তখন বুঝতে পারেন যে কেউ তার জমিতে ঔষধ স্প্রে করে চারা মেরে দিয়েছে। আবু সাঈদ জানান, তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না কারা এই জঘন্য কাজটি করেছ। তবে যারাই করুক তাকে আর্থিক ভাবে ক্ষতি করতে এই কাজটি করেছে বলে ধারনা করছেন। তিনি এ বিষয়ে থানায় একটি ডায়েরী করবেন বলে জানিয়েছেন।

অপর কৃষক ওবাইদুর রহমান জানান, মূলত সাঈদকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে এটা করা হয়েছে। যারা কাজটি করেছেন তারা জঘন্যতম কাজ করেছেন। মানুষের ক্ষতি করতে ফসল নষ্ট করা হয়েছে। ওবাইদুল রহমান আরো জানান, এই অবস্থায় চারা পেলে তারা ধান চাষ করতে পারবেন, অন্যথায় চাষ বন্ধ থাকবে।

স্থানীয় নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সাইদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি খুবই খারাপ হয়েছে। যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আমা জরুরী বলে তিনি মনে করেন।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এনায়েত কবির জানান, তারা সংবাদ পেয়ে সরেজমিনে দেখতে যান। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এভাবে ফসলের ক্ষতি করা খুবই খারাপ কাজ। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অবহিত করার জন্য ছবি উঠিয়ে বন্ধের দিনে অফিসিয়াল পেজে পোষ্ট করেছেন বলে জানান। পরে অফিস খুললে লিখিত ভাবে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন এনায়েত কবির। তাছাড়া কৃষক যাতে চারা পান সে বিষয়ে কৃষি বিভাগ পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button