ঠাকুরগাঁও; প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ জনপদ
ঝিনাইদহের চোখঃ
রংপুর বিভাগের একটি জেলা ঠাকুরগাঁও। বৃটিশ শাসনকালে টাঙ্গন, শুক, কুলিক, পাথরাজ ও ঢেপা বিধৌত এই জনপদে একটি ঠাকুর পরিবারের উদ্যোগে বর্তমান ঠাকুরগাঁ পৌরসভার কাছাকাছি কোনো একটি জায়গায় থানা স্থাপন করা হয়। আর এই ঠাকুর পরিবারের নাম অনুসারে থানাটির নাম হয় ঠাকুরগাঁও থানা। আবার আরেকটি মত আছে যে, ঠাকুর-অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যা এই অঞ্চলে বেশি থাকার কারণে স্থানটির নাম হয়েছে ঠাকুরগাঁও। ১৯৮৪ সালে ৫টি থানা নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা যাত্রা শুরু করে।
ঠাকুরগাঁও জেলা ছোট হলেও এটি একটি প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ জনপদ। এখানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষগুলো বহু বছর ধরে তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আগলে রেখেছে। ঠাকুরগাঁও জেলার প্রাচীন পুকুর আর গড়গুলোর অস্তিত্ব আজও সুপ্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন প্রকাশ করে। একাত্তর এর স্বাধীনতার পর থেকে ঠাকুরগাঁও জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে উন্নততর এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের লোক সংস্কৃতির সাথে নদী মেখলা প্রকৃতি যেন এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজ পরিবর্তনের যুগে বাংলার পল্লী জীবনেও পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। তবে পল্লী জীবন আজ পরিবর্তন হলেও তা একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। লোকসাহিত্য থেকে শুরু করে লোকনৃত্য আর পালাগান সকল ক্ষেত্রেই ঠাকুরগাঁওয়ের লোকসংস্কৃতির অবদান রয়েছে। আমাদের দেশের অন্যসব এলাকার লোকসংস্কৃতির মধ্যে একটা সামঞ্জস্য থাকলেও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে তার ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
ঐতিহাসিক স্থাপনা, দর্শনীয় স্থান, পর্যটন স্পট, পুরনো রাজবাড়ি, নান্দনিক নকশায় নির্মিত মসজিদ-মন্দির, শতবর্ষী গাছ, নদী-নালা, বিল-জলাধারের টলমলে স্বচ্ছ পানি, অনাবিল প্রকৃতি-এসবই টানে পর্যটকদের। আর এই সবই রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। ভিন্নতর এই ঠাকুরগাঁও জেলায় যে পুরাকীর্তি স্থাপনা রয়েছে সেগুলো হল- হরিপুর রাজবাড়ী, ছোট বালিয়া জামে মসজিদ, জামালপুর জমিদারি জামে মসজিদ, শনগাঁ জামে মসজিদ, ইমামবাড়া, জগদল রাজবাড়ী, পীর নাছিরুদ্দিন শাহ্ এর মাজার, রাজভিটা, হরিণমারী শিব মন্দির।
এছাড়াও কিছু দেখার মত স্থান রয়েছে। যেমন, প্রাচীন রাজধানীর চিহ্ন, ফান সিটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, বাংলা গড়, সাপটি বুরুজ, রানীসাগর, আঠারো গান্ডি পোখর ইত্যাদি।