অন্যান্য

স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঝিনাইদহ কৃষি ও অর্থনীতিতে আনবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন

ঝিনাইদহের চোখ-
২৫ জুন বাংলাদেশ সরকারের নিজ টাকায় গড়া পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা প্রবেশের সাথে সাথে আঞ্চলিক কৃষি ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে ঝিনাইদহের কৃষি ও অর্থনীতিতে পড়বে ব্যাপক প্রভাব। মাত্র ৪-৫ ঘন্টায় ঢাকায় পৌছানোর সুযোগে ঝিনাইদহের কৃষিপণ্য বিপণনে কৃষক-ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন, ভোক্তারা পাবেন টাটকা সবজির স্বাদ। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামে ঝিনাইদহের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের একটা বড়বাজার রয়েছে। কিন্তু রাস্তায় যানযট ও দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটের কারণে টাটকা পণ্য ভোক্তার হাতে পৌছানো অসাধ্য ছিল।

পদ্মা সেতু রুট দিয়ে এখন মাত্র ৪-৫ ঘন্টার মধ্যেই ঢাকায় ও আগের তুলনায় কম সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম ও সিলেটে কাঁচামাল পৌছে দেওয়া সম্ভব। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবার লাভেরমুখ দেখবেন এই জেলার গবাদি পশু পালন কারিরা। পরিবহন ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় গরু-ছাগল মোটাতাজা করেও ভালো বাজার পায়নি এই জেলার খামারিরা। এ বছর থেকেই এই খাতে ব্যাপক সম্ভবনা উকি দিচ্ছে। ফেরিঘাটের জট, দালাল সিন্ডিকেট ও আবহাওয়ার কবলে পড়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় যাওয়ার ক্লান্তি, মাঝপথে মারা যাওয়া রোগীর স্বজনদের আহাজারিও কমে আসবে এখন থেকে।

ঝিনাইদহের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। জেলার পান, কলা, বেগুন, করলা, মরিচ, পেয়াজ, গোলআলু, লাউ, শিম, পটলসহ বিভিন্ন জাতের কপি, টমেটো, বিভিন্ন শাকের চাহিদা রয়েছে সারা দেশের বাজারে। জেলায় উৎপাদিত শাক-সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে খুব সহজেই রপ্তানি করা যাবে অন্য জেলায়।

পরিবহন ব্যবস্থাকে ইস্যু করে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে কম মূল্যে পণ্য কিনে ঢাকায় চড়া মূল্যে বিক্রি করে। কিন্তু তাতেও ভোক্তারা সঠিক ও স্বাভাবিক স্বাদ থেকে বঞ্চিত ছিল। কারণ ক্ষেত থেকে ওঠানোর পরে পরিবহনেই ১ দিন কেটে যেত এই পণ্যের। কিন্তু এবার মাত্র ৫ ঘন্টার মধ্যেই এই জেলা থেকে পণ্য ঢাকায় পাঠানো সম্ভব হবে। এই জেলারউৎপাদিত পান এবার ঢাকা ও সিলেট বাসির প্রয়োজন মেটাবে আরও বেশি।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা গোলাম ফারুক খান বলেন, ঝিনাইদহ কৃষি নির্ভর অর্থনীতির একটি জেলা। আগে এখান থেকে গাড়িতে করে কাঁচামাল ঢাকায় পৌছাতে সময় লাগতো ১৬-২০ ঘন্টা। এখন সেইসময় ৩ ভাগের এক ভাগে আসলো। কৃষক যেমন ভালো দাম পাবে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও লাভ করতে পারবে । ভোক্তাদের হাতে সতেজ-টাটকা পণ্য পৌছে যাবে খুব সহজেই । এই জেলার কৃষিপণ্য বিপণনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে এবার।

অন্যদিকে ঝিনাইদহে আমদানিকৃত পণ্যেও এবার ক্যারিং খরচ কম হওয়ায় ঢাকার বাজারের সাথে সামঞ্জস্য হবে বলে ব্যবসায়ীদের মতামত। পরিবহন ব্যবস্থা ভালোনা হওয়ায় অনেক উদ্যোগ মাঠে মারা গেছে। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ায় এবার নতুন স্বপ্ন উকি দিচ্ছে উদ্যোক্তাদের মধ্যেও।

ঝিনাইদহ বিসিক এর উপ ব্যবস্থাপক সালমা রহমান জানান, পরিবহন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে আমাদের মত মফস্বল জেলা শহরের শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহী হবে বড় বড় উদ্যোক্তারা। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার কারণে জেলার শিল্প খাতেও ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button