কালীগঞ্জটপ লিড

ঝিনাইদহের আলাউদ্দিনের শেষ সম্বলটিও রইল না

#ঝিনাইদহের চোখঃ

আলাউদ্দিনের শেষ সম্বল একমাত্র বাইসাইকেলটিও ভেঙ্গে গেল। মালামাল বোঝায় করে রাস্তা দিয়ে যাবার সময় হঠাৎই ভেঙ্গে পড়ে তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন সাইকেলটি। এই সাইকেলে করেই তিনি গ্রামে গ্রামে বাদাম বিক্রি করেন। বুধবার দুুপরে বাদাম বিক্রি শেষে ভাংড়ী নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

ভাঙ্গা সাইকেল সামনে নিয়ে ঘটনাস্থল যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বারোবাজার নামক স্থানে রাস্তার ধারে বসে তিনি কান্না করছিলেন, আর বলছিলেন অন্তসত্বা মেয়ে ঘরে। তাকে ক্লিনিকে ভর্তি করতে হবে। এখন তার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করবেন, না সাইকেল কিনে আবার বাদাম নিয়ে গ্রামে যাবেন।

আলাউদ্দিন (৫০) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রামের আখের আলীর পুত্র। তার দুই পুত্র আর এক কন্যা রয়েছে। বড় ছেলে আবুল কাশেম নানা বাড়িতে থাকেন। ছোট ছেলে রাসেল হোসেন তার সঙ্গেই আছেন। একমাত্র মেয়ে খাদিজা খাতুনের বিয়ে দিয়েছেন। নিজের কোনো চাষযোগ্য জমি নেই। বাবার রেখে যাওয়া ৩ শতক জমির উপর টিনের চালা করে বসবাস করেন।

আলাউদ্দিন আরো জানান, ছোট বেলা থেকেই বাদাম বিক্রি করে অর্থ উপার্যন করেন। পূর্বে কাঁধে করে বাদাম বিক্রি করতেন। এখন আর সেটা পারেন না। দুই বছর হয়েছে ১৫ শত টাকা দিয়ে একটি পুরাতন বাইসাইকেল ক্রয় করেন। এই সাইকেলে গ্রামে গ্রামে বাদাম বিক্রি করেন। এভাবে তার প্রতিদিন ২শত থেকে ২৫০ টাকা আয় হয়। যা দিয়ে তাদের সংসার চলে।

বুধবার তিনি বারোবাজার এলাকায় বাদাম বিক্রি করে বেশ কিছু ভাংড়ী নিয়ে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বারোবাজার পেট্রোল পাম্পের কাছে একটি নিচু গর্তে পড়ে তার বাইসাইকেলটি ভেঙ্গে যায়। তিনি বলেন, মেয়ের গর্ভে বাচ্চা। শনিবার (৬ জুলাই) ক্লিনিকে ভর্তি করতে হবে। চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছেন তার সিজার করাতে হবে। এই জন্য টাকার প্রয়োজন। এখন মেয়ের চিকিৎসার টাকা কোথায় পাবেন, আর সাইকেল কি দিয়ে ক্রয় করবেন।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের (বলিদাপাড়া এলাকার) কাউন্সিলর মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, আলাউদ্দিন হতদরিদ্র একটা মানুষ। কঠিন পরিশ্রম করেন, কিন্তু পুজি না থাকায় আজো সোজা হয়ে দাড়াতে পারেননি। অনেক কষ্ট করে এই পুরাতন সাইকেলটি ক্রয় করেন। সেই সাইকেলটিও ভেঙ্গে যাওয়ায় তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়লেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button