ঝিনাইদহের চোখ-
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ দরপত্রের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ভবন নিলামে বিক্রি করে। প্রায় দুই মাস আগে বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার ভবনটি ভেঙে ইট-কাঠ সব নিয়ে গেছেন। তবে সেখানে বড় বড় গর্ত ভরাট করা হয়নি। ভবনের মাটি বিদ্যালয় মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্র-শিক্ষকেরা চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
এদিকে বিদ্যালয় মাঠের এই অবস্থায় প্রতিদিনের অ্যাসেম্বলি (শিক্ষার্থী সমাবেশ) করতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের ছাদে। এই অবস্থা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
গত শনিবার বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দুইতলার ছাদে শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি (ছাত্র সমাবেশ) চলছে। শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। পরে শারীরিক কসরত শেষে সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে চলে যায়।
শৈলকুপা উপজেলার রয়েড়া বাজারে ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উমেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক আছেন ছয়জন, আর দপ্তরি আছেন একজন। বিদ্যালয়টির বর্তমান শ্রেণিকক্ষ চারটি, অফিস কক্ষ একটি। বিদ্যালয়ে বর্তমানে যে ভবনটিতে অফিস আর শ্রেণিকক্ষ রয়েছে, সেটি নির্মাণ করা হয় ২০০৬ সালে। পুরোনো একটি একতলা ভবন ছিল, যা গত জুলাই মাসের শুরুর দিকে ভেঙে নিয়ে গেছেন ঠিকাদার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম নবী জানান, স্কুল বন্ধের মধ্যে পরিত্যক্ত ভবনটি ভাঙা হয়েছে। তারপরও যিনি ভবনটি কিনেছিলেন, তাঁকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছেন বিদ্যালয়ের মাঠের গর্ত ভরাট করে মাটি সমান করার জন্য। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তিনি ভবনটি ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি করে চলে যান। পরে শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছেন, ওই স্থানে নতুন ভবন হবে। এই অবস্থায় পড়ে আছে মাঠটি।
গোলাম নবী আরও বলেন, মাটি খুঁড়ে ভবনের ইট ওঠানো হয়েছে। এতে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। পুরোনো ভবনের মাটি বিদ্যালয় মাঠে ছড়িয়ে পড়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি আটকে যাচ্ছে। পুরোনো ভবনের সামনের অংশে যেটুকু সমতল জায়গা ছিল, সেটাও উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। সেখানে পানি আটকে থাকছে।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ইতিপূর্বে তাঁরা মাঠে অ্যাসেম্বলি করতেন। বৃষ্টির সময় বারান্দাজুড়ে আর মাঠের কিছু অংশে সমাবেশ করতেন। এখন কোথাও সমাবেশ করার সুযোগ নেই। এ কারণে তাঁরা ভবনের ছাদে সমাবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কবে এই অবস্থার অবসান হবে, সেটাও ভেবে পাচ্ছেন না।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহেদ আলম জানায়, তারা মাঠে খেলাধুলা করতে পারে না। এমনকি মাঠে হাঁটাচলাও করতে পারছে না। ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন বলেন, যিনি ভবনটি কিনেছিলেন, তাঁর দায়িত্ব ছিল মাটি ভরাট ও সমান করে দেওয়া। বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না।