কোটচাঁদপুর বলুহর মৎস্য হ্যাচারিতে রেনু উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা
আব্দুল্লাহ বাশার, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহের চোখ-
চীন ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত মাছের রেনু নিয়ে এক সমৃদ্ধ ভান্ডার গড়ে উঠেছে বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে। চলতি বছর থেকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প জাতীয় মাছের রেনু উৎপাদন শুরু করেছে। প্রথম বছরে মাঠ পর্যায়ের মাছ চাষিরা সাফল্য পাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় কদর বেড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির রেনুর
। বর্তমান এই হ্যাচারিতে চীন থেকে আমদানীকৃত সিলবার, বিগহেড ও গ্রাসকার্পের রেনু ও ভিয়েতনামীয় পাঙ্গাস, কালবাউস এবং সুবর্ন রুই মাছ চাষ করা হচ্ছে।
হ্যাচারি কর্মকর্তারা আশা করছেন পুরানো ব্রুড মাছের সাথে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত মাছ সংযোজন হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারিতে রেনুর ব্রুড ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষকে উন্নত জাতের কার্প জাতীয় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আমিষের ঘাটতি পুরণের লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামে দেশের সর্ববৃহৎ মৎস্য হ্যাচারি কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১০৩ একর আয়তন বিশিষ্ট এই হ্যাচারিতে রয়েছে ৩০টি দৃষ্টিনন্দন পুকুর। ঝিনাইদহ ছাড়াও যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, রাজবাড়ি, মেহেরপুর ও সাতক্ষিরাসহ বিভিন্ন জেলায় এই হ্যচারির উৎপাদিত রেনু পৌছে যাচ্ছে।
হ্যাচারি সূত্রে জানাযায়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে এই হ্যাচারীতে মাছ বিক্রি সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ লাখ ১১ হাজার টাকা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে লোকবলের অভাবে কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। মোট ২৭টি পদের মধ্যে ১৯টি পদ শুন্য রয়েছে। গুরুত্বপুর্ন পদগুলো জনবল নিয়োগ করা হলে এই হ্যাচারি রেনু উৎপাদে আকাশ ছোয়া সাফল্য এনে দিত। তাছাড়া হ্যাচারির অতিপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। অনেক ভবন এখনো জরাজীর্ন।
আব্দুল করিম নামে ঝিনাইদহের নলডাঙ্গা এলাকার এক মৎস্য চাষি জানান, ব্রুড উনয়নে মাছ চাষে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে।
হাটগোপালপুর এলাকার চাষি তুষার আহম্মেদ জানান, আমার মতো দাক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মৎস্য চাষিরা বলুহর হ্যাচারির রেনু নিয়ে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বি হচ্ছেন। অনেক বেকার যুবক পুনবার্সিত হয়েছে।
হ্যাচারি ম্যানেজার মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম জানান, বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি একটি সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানসম্পন্ন রেনু উৎপাদন করে মৎস্য চাষিদের কাছে সুলভ মুল্যে বিক্রি করে থাকে। এছাড়া আধুনিক কলাকৌশল ও সর্বশেষ লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ চাষিদের জীবন মান উন্নত করে থাকে। ফলে এলাকায় বেকারত্ব হ্রাসের পাশাপাশি ব্যপক হারে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষের পুকুরে ৬০ ভাগ রেনু বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি থেকে যায়।