ঝিনাইদহে ভ্যান ছিনতাই ।। প্রতিবন্ধী সন্তানদের খাবার যোগাচ্ছে প্রতিবেশীরা
মোঃ মঈন উদ্দিন খান, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহের চোখ-
ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে উপার্জনের একমাত্র ভ্যানটি খোয়া গেছে আতিয়ার রহমানের। আয়-রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। রান্না হয়না সংসারে। তাই দুই দিন ধরে পাশের বাড়ি থেকে চেয়ে এনে মুখের অন্ন জোটাচ্ছে প্রতিবন্দী ছেলে-মেয়ের। এমন কঠিন অবস্থায় পড়েছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সারুটিয়া গ্রামের পরিবারটি।
প্রতিবেশী শাহিনুর রহমান বলেন, ভ্যান চালানো আতিয়ারের পেশা। দীর্ঘ দিন সে ভ্যান ভাড়ায় নিয়ে চালাত। কয়েক মাস হল পাশের বাজারের পরিচিত এক ম্যাকারের কাছ থেকে ভানটি কিনেছে বাকিতে। প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় হত তা দিয়ে কোন রকম সংসার চালাতো । আর বাকি টাকা দিত ওই মেকারের ভ্যানের জন্য।
জানাযায়, গত ৩০ আগষ্ট (মঙ্গলবার) রাতে ভাড়া খাটার সময় যাত্রী সেজে ৩ জন ভাড়া করে নিয়ে যায় আতিয়ারকে । এরপর কিছুদুর যাবার পর ছিনতাইকারীরা তাঁর চোখ মুখ বেধে ভ্যানটি নিয়ে যায়।
আরো এক প্রতিবেশী বলেন, আতিয়ার পারিবারিক জীবনে দুই সন্তানের জনক। তবে দুই জনই প্রতিবন্ধী। এরমধ্যে মেয়ে কাকলী খাতুন(১৩) শারীরিক প্রতিবন্ধী । আর ছেলে শিহাব (৮) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। সংসার চালানোর শেষ সম্বল হারিয়ে, সে এখন দিশেহারা।
ভুক্তভোগী আতিয়ার রহমান জানান, প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার ভ্যান নিয়ে বের। এরপর উপজেলার ঘাঘা গ্রামে আসার পর ৩ জন অপরিচিত ব্যক্তি ভ্যান ভাড়া করেন। যেতে বলেন জালালপুরে। কথা মত ঘাঘা মাঠের রাস্তা দিয়ে জালালপুরের দিকে যাচ্ছিলাম । কিছুদুর যাবার পর ওই মাঠের মধ্যে গিয়ে আমার হাত-পা চোখ বেঁধে ফেলে তারা। নিয়ে যায় আমার ইঞ্জিন চালিত ভ্যান আর টাকা। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ছাড়া পেয়ে বাড়িতে ফিরে যায় খালি হাতে।
তিনি আরো বলেন, এক দিকে দুই প্রতিবন্ধি সন্তানদের নিয়ে হিমশিম খাচ্ছি । অন্যদিকে গুরুত্বতর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন আমার স্ত্রী। দীর্ঘ ৫ বছর চিকিৎসা করানোর পর সে মারা যায়। এ দীর্ঘ সময় তাঁর চিকিৎসা ব্যয় মিটাতে গিয়ে আমার সব কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। আমার শেষ সম্বলটুকু ছিল ইঞ্জিন চালিত ওই ভ্যানটি। ভ্যান ছিনতাইয়ের পর থেকে পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে এসে তাদের খাবার দিচ্ছি। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানার ডিউটিরত উপপরিদর্শক মাসুদুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় আতিয়ার রহমান বাদী হয়ে থানায় একটা অভিযোগ করেছেন। এটা দেখছেন তালসার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আজগর আলী।