জানা-অজানাঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহে গরু খামারিদের মধ্যে “লাম্পি স্কিন ডিজিজ” আতঙ্ক

মনজুর আলম, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-

ঝিনাইদহে লাম্পি স্কিন ডিজিজ বা এলএসডি রোগ মারাত্নক আকার ধারন করেছে। এতে খামারি মালিক এবং গৃহে পালিত গরুর মালিকেরা আতঙ্কে রয়েছে। গত সপ্তাহের ব্যাবধানে জেলার বিভিন্ন গ্রামে কয়েকটি গরু মারা যাবার খবর পাওয়া গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ইহা ভাইরাস জনিত রোগ। মশা, মাছির মাধ্যমে রোগটি দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। ১৯২৯ সালে আফ্রিকার জাম্বিয়াতে প্রথম এই রোগ দেখা যায়। ১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৪৫ সালে ওই মহাদেশে রোগ মারাত্নকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানে অনেক পশু মারা যায়। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে এই রোগ প্রথম দেখা যায়। রোগটি বর্ষা এবং শরৎকালে বেশি পরিমাণ দেখা যায়। আক্রান্ত পশু ( বিশেষ করে গরু) জ্বরে আক্রান্ত হয়, খাবার খেতে চাইনা, আস্তে আস্তে গরুর শরীরে ব্যথা হয়ে ফুসকা উঠে। পরবর্তীতে ওই জায়গায় ঘাঁ সৃষ্টি করে।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধুহাটি ইউনিয়নের বাজার গোপালপুর গ্রামের আলী আজগর, পাশে মামুনশিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, বাবলুর রহমান, শাহাজান আলী, আব্বস আলী এবং শওকত আলীর একটি করে গরু মারা গেছে। এছাড়া বাজার গোপালপুরে জাহিদুর রহমান, পিন্টু মিয়া সহ অনেকের এবং মামুনশিয়ার সোহরাব হোসেন, আতিয়ার রহমান, মাসুম বিল্লাহ, রবিউল ইসলাম, বাবলুর রহমানের একটি করে গরু মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত হয়েছে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

এদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে গরুর গায়ে জ্বর আসে এবং পরে খাবার খেতে চাইনা। আস্তে আস্তে গরুর গায়ে পক্সের মত চিহ্ন দেখা যায়। পরে সেই গুলো ফেটে পড়ে এবং পুঁজবের হতে থাকে। কোন উপায় না পেয়ে স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কোনটি ভালো হয়। আবার কোনটা মারা যাচ্ছে।

কথা বলা হয় সদর উপজেলার কনেজপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, তার চারটি গরুর মধ্যে দুইটি গরুর এই রোগ দেখা গেছে। প্রথমে ঘাস খাওয়া বন্ধ করে। দেখা গেল শরীরে জ্বর এসেছে। পরে শরীরে পক্সের মত ফুনকা ওঠে ফেটে পুঁজবের হচ্ছে। গ্রামের গশু চিকিৎসকদের নিকট থেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের অনেকের গরুর এই রোগ দেখা গেছে বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে জেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের ( ভারপ্রাপ্ত) উপ- পরিচালক ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার বলেন, মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। আক্রান্ত পশুর মালিককে চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রোগের অবস্থা বুঝে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। অনেক পশু ভালো হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button