যানবাহনে নামাজ
যানবাহন আমাদের জীবনের অপরিহার্য এক অনুষঙ্গ। জীবন চলার পথে আমাদের যানবাহন ব্যবহার করতেই হয়। এ যানবাহন চলাকালে অনেক সময় আমাদের সামনে নামাজ পড়ার সময় এসে দাঁড়ায়। গন্তব্য কাছে হলে অবশ্য নামাজ আদায়ের ব্যাপারে তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না। গন্তব্য দূরে হলেই যা সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই এক্ষেত্রে শরিয়তের নির্দেশনা জানে না দেখে ইচ্ছা ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকেন। অথচ শরিয়ত এখানে নামাজ আদায়ের সুযোগ রেখে দিয়েছে।
এক্ষেত্রে মাসয়ালা হলোÑ চলন্ত লঞ্চ, জাহাজ, ট্রেন ও বিমানে ‘ফরজ নামাজ’ সম্ভব হলে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে রুকু-সিজদাসহ আদায় করবে। তবে যদি দাঁড়ানো কষ্টকর হয় তাহলে বসে স্বাভাবিক রুকু-সিজদা করে নামাজ আদায় করবে। এভাবে যদি নামাজ পড়া সম্ভব হয় তাহলে পরবর্তী সময়ে তা আর পড়তে হবে না। তবে যদি কেবলামুখী হয়ে রুকু-সিজদার সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয় তাহলে যেভাবে সম্ভব বসে কিংবা ইশারাতেই নামাজ পড়ে নেবে। তবে এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পরবর্তী সময়ে সে ফরজ নামাজ আদায় করে নিতে হবে।
আর বাসের ক্ষেত্রে আলাদা করে বলতে হয়Ñ বাসে যেহেতু সাধারণত দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়া সম্ভব হয় না সেহেতু কাছে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে গন্তব্যে পৌঁছে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে না মনে হলে এবং বাস থেকে নেমে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা অসুবিধাজনক না হলে পথিমধ্যে নেমেই ফরজ নামাজ আদায় করে নেবে। আর গন্তব্য দূর হলে কিংবা বাস থেকে নেমে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ অথবা আশঙ্কাজনক মনে হলে বাসের সিটে বসে বা ইশারায় নামাজ আদায় করে নেবে এবং এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক এ নামাজ পরবর্তী সময়ে কাজা করে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘযাত্রায় বাসচালকদের উচিতÑ ফরজ নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে কোনো একটি মসজিদে যাত্রাবিরতি করা। এক্ষেত্রে বাস মালিকদের পক্ষ থেকেও ইতিবাচক ভূমিকা ও বাসের স্টাফদের প্রতি এ ব্যাপারে আদেশমূলক দিকনির্দেশনা থাকা উচিত। সঙ্গে সঙ্গে বাসের যাত্রীদেরও কর্তব্য হবেÑ কোনো যাত্রী নামাজ পড়তে চাইলে তার প্রতি বিরক্তিভাব না দেখানো এবং বাস থামার ব্যাপারে তার পক্ষ নিয়ে চালককে এজন্য অনুরোধ করা।