নুসরাত, বিপন্ন মানবতা!!–সবুর মিয়া
সবুর মিয়া, ঝিনাইদহের চোখঃ
অবসান হলো নুসরাত নুসরাত এর বেঁচে থাকার স্বপ্ন। চিরতরে হারিয়ে গেল পৃথিবীর মায়া ছেড়ে, যেখান থেকে আর ফিরবে না,কখনো ফিরবে না।
সে মানুষের কাছ থেকে পেল নিষ্ঠুরতা! কি কঠিন নির্মমতা! মনে হচ্ছে মানুষ আদিম যুগে পদার্পণ করেছে, নেই কোন মানবতা, যাকে নিয়ে আমার আজকের এই লেখা সে হচ্ছে নুসরাত জাহান,এক কিশোরী পিতা মাতার স্বপ্ন ছিল,স্বপ্ন থাকবেই না কেন? সব মা বাবার স্বপ্ন থাকে তার সন্তানকে নিয়ে কিন্তু সে স্বপ্ন গুলো এভাবে ধূলিসাৎ হবে, পৃথিবীর নির্মম ইতিহাস সৃষ্টি করে বিদায় নিবে এটা কি হতে পারে।এটা কেমন নির্মম পরিহাস, কেমন বর্বরতা।
আমরা আর কত দেখব। বিগত সময় আমরা দেখেছি তনু হত্যা, ত্বকীর মত মেধাবী হত্যার নির্মম নিষ্ঠুর রাজনীতি।আমরা দেখেছি সাগর রুনি হত্যার নির্মম পরিহাস।আজব বিচার!! স্বাধীন দেশে আমরা কি দেখতে চেয়েছিলাম?এখন এসে দেখতে হল নুসরাত জাহানের মত নিষ্পাপ এক কিশোরীর পরিবার পরিজনের কান্নার হৃদয় বিদারক দৃশ্য। মনে হয়,এটা অনেক ক্ষেত্রে সিনেমা উপনাশকেও হার মানায়; একবিংশ শতাব্দীতে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, এই চরিত্রের অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি এই ,হত্যাকাণ্ডের মূল চরিত্রের মূল হোতা হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। এই লম্পটরা কিভাবে মানুষ গড়ার কারিগর হয়, এরা তো জ্ঞানপাপী,সাপের চেয়েও ভয়াবহ।এদের কারণে জাতি আজ লজ্জিত।
উল্লেখ্য এদের সাথে আছে রাজনৈতিক শক্তি, প্রশাসনিক শক্তি, যাদের কারণে নুসরাত এক ইতিহাস; কিভাবে মানুষ এত জঘন্য হতে পারে,মেয়ের বয়স অথবা নাতিনাতনীর বয়সের একটা কিশোরীকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিতে পারে।মানুষ কি আসলে এত নিষ্ঠুর ,আর আমরা যে প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাই। সেই প্রশাসন কলঙ্কিত করেছে প্রশাসনকে ,সমগ্র জাতিকে, সমগ্র শিক্ষিত জাতির বিবেককে। সবকিছুই রাজনীতির এক ভয়ঙ্কর ছোবল। নুসরাত জাহান কে পুলিশ একটা ভিডিও সাক্ষাৎকার নিয়েছিল ।সাক্ষাৎকারটি আপনারা সবাই দেখবেন, এই সাক্ষাৎকারের ভাষাশৈলীতা প্রমাণ করে,প্রশাসন আজ কোথায়! পুলিশের ভিডিও সাক্ষাৎকারটি স্পষ্ট করেছে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। শুধু পুলিশ কেন?জেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যারা জনগণের ভোট ভিক্ষা করে জনগণের সেবক এর ভূমিকা পালনের কথা বলে।তারা কোথায় ছিল !
কোথায় ছিল স্থানীয় প্রভাবশালী মহল! কোথায় ছিল মানবাধিকার ;কোথায় ছিল সমাজ সেবক। গণমাধ্যম না থাকলে সমগ্র জাতি হয়তো বিষয়টা জানতেও পারতো না। কিবা জানলেও তাদের অর্থাৎ প্রভাবশালীদের রিমোট কন্ট্রোলে মানুষ অন্য এক গল্প জানতো ,বাস্তবতা চিরতরে হারিয়ে যেত। আমরা কি শুধু এক একটি অন্যায় শুনবো, দেখব, বলবো, এর কি কোন সমাধান নাই ?এই অন্যায় এর পেছনে কি লুকিয়ে আছে সেটা কি বের করার দরকার নাই?
পরিশেষে বলতে চাই না,পৃথিবীতে দেখে যেতে চাই ন্যায় বিচার,এমন বর্বরতা ও নিষ্ঠুর মানুষদের হাত থেকে পরিত্রান চাই।