বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে সুন্দরবন
#ঝিনাইদহের চোখঃ
জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে সুন্দরবন বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুলতানা কামাল।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘সুন্দরবন সুরক্ষায় ইউনেসকোর সর্বশেষ সুপারিশ, সুন্দরবনের প্রতি সরকারের অবহেলা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
আগামী ৩০ জুন থেকে ১০ জুলাই আজারবাইজানের রাজধানী বাকু শহরে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, ‘ওই সভায় বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের সুপারিশগুলোর ওপর আলোচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। সুন্দরবন বিষয়ে কেন্দ্রের সুপারিশ যদি কমিটি চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে সুন্দরবন তার বর্তমান বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান হারাবে। সারা বিশ্বের দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এটি একটি বড় অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও লজ্জাকর হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে, আমাদের দেশে যে সম্পদ আছে তার মালিক হচ্ছে জনগণ। শুধুমাত্র সরকারের ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে এদেশের কোনো সম্পদের ওপর সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। জনগণের আপত্তির মুখে যদি এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাহলে সেটা হবে অসাংবিধানিক।’
তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে সরকার কোনো ধরনের আন্দোলনকে অবজ্ঞা করতে পারে না। যদি করে তা অগণতান্ত্রিক আচরণ।‘
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘সুন্দরবন রক্ষায় এখনই কোনো আল্টিমেটামে আমরা যাব না। এখনো সময় আছে। আমরা এ বিষয়ে ১৩টা গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। দেড় বছর আগে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছি। তবে এখনো কোনো উত্তর পায়নি।’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা চাই সরকার তার ভুল অবস্থান থেকে সরে এসে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করুক। বনবিরোধী সকল স্থাপনা উৎখাত করুক। বিজ্ঞানসম্মতভাবে যথেষ্ট পরিমাণে কয়লার বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ তৈরি করুক।’
অনুষ্ঠানে কবি শামসুল হুদা বলেন, সুন্দরবনের ওপর ১৫-১৭টি জেলার মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। উন্নয়নের নামে সুন্দরবনের পরিবেশ ধ্বংস করা ঠিক হবে না। এ বিষয়ে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।