আর কত বছর গেলে চালু হবে ঝিনাইদহের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্কুল
#ঝিনাইদহের চোখঃ
প্রতিষ্ঠার পর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও চালু হয়নি ঝিনাইদহের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী আবাসিক বিদ্যালয়টি। শহরের সার্কিট হাউজ সড়কে তিন একর জমিতে এ স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মূক-বধির আবাসিক স্কুল স্থাপন প্রকল্পের অধীনে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, দীর্ঘদিনেও প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগের অভাবে বিদ্যালয়টি চালু করা যাচ্ছে না।
জেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে শুরু করে ২০০৬ সালের মধ্যে বিদ্যালয়টি নির্মাণের কথা ছিল। পরে নির্মাণের সময় ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। নির্মাণ করা হয় একাডেমিক ভবন ও দুটি আবাসিক হলসহ অন্যান্য অবকাঠামো। ব্যয় হয় ৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
এ বিদ্যালয়ে প্রতি বছর যশোর, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের ৫০ জন ছেলে ও ৫০ জন মেয়ে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে ভর্তির কথা রয়েছে। অথচ কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এ অঞ্চলের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা বিদ্যালয়টির শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় আসবাব ও শিক্ষার্থীদের বিছানা সরবরাহ করা হয়। যেগুলো রাখা হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মধুপুর শিশু পরিবারে। দীর্ঘদিন পড়ে থেকে বর্তমানে এসব আসবাবপত্রের অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের জন্য দেয়া দুটি কম্পিউটার। অন্য দুটি ল্যাপটপ ব্যবহার হচ্ছে সমাজসেবা অফিসে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ স্কুলের জন্য একজন প্রধান শিক্ষক, একজন হাউজ প্যারেন্ট, দুজন শিক্ষক, দুজন কারিগরি শিক্ষক, একজন হিয়ারিং এইড টেকনিশিয়ান ও একজন মেট্রন কাম নার্সসহ ১৮টি পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত এসব পদে লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। স্কুলটি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য হলেও নিয়োগ দেয়া হয়েছিল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের দুজন শিক্ষক। যাদের আবার অন্যত্র ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে।
এ অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারিতে ২৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও একদিনও ক্লাস হয়নি। শিক্ষার্থীদের খোরাকি বাবদ চলতি অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও তা ফেরত দেয়া হয়েছে। বর্তমানে স্কুলটির দেখভাল করছেন জেলা সমাজসেবা অফিসের একজন সহকারী পরিচালক।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, লোকবল নিয়োগ না হওয়ায় স্কুলটি চালু করা যাচ্ছে না। তবে এটি চালুর জন্য চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহের শিক্ষাবিদ প্রফেসর সুভেন্দু কুমার ভৌমিক বলেন, এটি একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। লোকবল নিয়োগের অভাবে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি অচল পড়ে আছে। অথচ বিদ্যালয়টি চালু করা গেলে ঝিনাইদহসহ আশপাশের কয়েক জেলার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা উপকৃত হতো।