কবি সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ
#ঝিনাইদহের চোখঃ
প্রথিতযশা কবি, লেখিকা, নারীবাদী ও আধুনিক বাংলাদেশের নারী প্রগতি আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব বেগম সুফিয়া কামালের ১০৯তম জন্মদিন আজ। এই মহীয়সী নারী আজীবন মুক্তবুদ্ধির চর্চার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিপক্ষে সংগ্রাম করেছেন।
সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। কবির জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে তারা নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সুফিয়া কামাল। তখন নারীশিক্ষা ছিল দুঃসাধ্য কল্পনা। মাত্র ১২ বছর বয়সে সৈয়দ নেহাল হোসেনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সাহিত্যপাঠে ছিল স্বামীর অনুপ্রেরণা, যা তাঁকে পরবর্তী সময়ে সাহিত্য রচনায় উদ্বুদ্ধ করে তোলে। ১৯২৬ সালে সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’। তিনি ছিলেন বেগম পত্রিকার প্রথম সম্পাদক।
মহীয়সী এই নারী ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মারা যান। তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন।
কবির জন্মদিন উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন বাংলাদেশের নারী সমাজের এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি নারী সমাজকে কুসংস্কার আর অবরোধের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি বেগম সুফিয়া কামালের সৃজনশীলতা ছিল অবিস্মরণীয়। শিশুতোষ রচনা ছাড়াও দেশ, প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সমাজ সংস্কার এবং নারীমুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার লেখনী আজও পাঠককে আলোড়িত ও অনুপ্রাণিত করে।
কবির রচিত কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে ‘সাঁঝের মায়া’, ‘মায়া কাজল’, ‘মন ও জীবন’, ‘শান্তি ও প্রার্থনা’ প্রভৃতি। গল্পগ্রন্থ ‘কেয়ার কাঁটা’। ভ্রমণকাহিনী ‘সোভিয়েত দিনগুলি’। স্মৃতিকথা ‘একাত্তরের ডায়েরি’। সাহিত্যে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সুফিয়া কামাল পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। এর মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পদক উল্লেখযোগ্য।