ক্যানসারের উপাদান কাপড় ধোয়ার ‘ডিটারজেন্ট’!
#ঝিনাইদহের চোখঃ
প্রথমসারির জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত অধিকাংশ ডিটারজেন্টে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ‘ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্ট’ নামের রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি লেক ও দেশের অন্যতম প্রধান নদী পদ্মার পানি পরীক্ষা করে এই পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
ক্যানসার সৃষ্টিকারী মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এই পদার্থ মূলত জামা-কাপড় পরিষ্কার ও কাপড়ের রং উজ্জ্বল করার কাজে ব্যবহৃত ডিটারজেন্টে অধিক হারে ব্যবহার করা হয়। শিল্প কারখানা ও বাসায় কাপড় ধোয়ার পর ব্যবহৃত পানির সাথে মিশে পুকুর ও নদীতে গিয়ে পড়ে।
জাবির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শফি মুহাম্মদ তারেকের তত্ত্বাবধানে স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিন মোস্তফার করা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর এক প্রকল্পের আওতায় এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষক মো. নাহিন মোস্তফা নিলয় জানান, গবেষণার জন্য বাজারে বিক্রি হওয়া ১০টি ডিটারজেন্ট ব্র্যান্ড নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ব্র্যান্ডসহ অধিকাংশ ডিটারজেন্টেই ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্টের পরিমাণ এবং প্রবলতা আদর্শিক পরিমাণের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে।
গবেষণায় বলা হয়, ডিটারজেন্টের মধ্যে ‘ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্ট’এর প্রবণতা স্পেক্ট্রোফটোমিটার ও থ্রি-ডি এক্সাইটেশন এমিশন ম্যাট্রিক্সের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, এই পদার্থ মানবদেহে এলার্জি, চর্মরোগ, জীনগত পরিবর্তন এবং কিডনি বিকলের মতো রোগের সৃষ্টি করে। এমনকি অতিবেগুনি রশ্মির সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থে রূপ নেয়।
‘ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইটেনিং এজেন্ট’ নামে এ পদার্থ চূড়ান্ত পানি শোধানাগারেও সম্পূর্ণরূপে দূর করা সম্ভব হয় না। বরং এটি চূড়ান্ত পানি শোধনের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গেও বিক্রিয়া করে ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ তৈরি করে বলে গবেষণায় বলা হয়।
গবেষণাটি ইউজিসির অর্থায়নে ও অধীনে একটি প্রকল্প ছিল এবং থিসিসের অংশ। আমরা খুব শিগগির পেপার সাবমিট করবো বলে জানান গবেষক নাহিন মোস্তফা নিলয়।