অন্যান্য

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন আজ

#ঝিনাইদহের চোখঃ

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সমাজসংস্কারক, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, লেখক, টিভি ব্যক্তিত্ব, পরিবেশ ও সমাজকর্মী এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। এ আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর ১৯৩৯ সালে এই দিনে কলকাতার পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭৮ সালে অধ্যাপক সায়ীদ প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত মূলত বইপড়া কর্মসূচির মাধ্যমে। তিনি বাংলাদেশের হাজার হাজার স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করেছেন।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের কচুয়া থানার কামারগাতি গ্রামে। তার বাবা আযীমউদ্দিন আহমদ ছিলেন একজন স্বনামধন্য শিক্ষক। মায়ের নাম করিমুন্নেসা।

১৯৬১ সালে শিক্ষকতা দিয়েই কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগ দেয়ার পর সিলেট মহিলা কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও ঢাকায় ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজে (বর্তমানে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ) শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কলেজ ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে সেখানে যোগদান করেন। ঢাকা কলেজেই তিনি তার শিক্ষকতা জীবনের স্বর্ণযুগ অতিবাহিত করেন।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ব্যক্তিত্বের প্রায় সব দিক সমন্বিত হয়েছে তার সংগঠক সত্তায়। ‘আলোকিত মানুষ চাই’- এ মন্ত্রে সারাদেশে বই পড়া আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিসেবে প্রায় তিন দশক ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়, তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে।

বাংলাদেশে টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে মনস্বী ও রুচিবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। টেলিভিশনের বিনোদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব। নানা ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চায় নিবিষ্ট। কবিতা, প্রবন্ধ, ছোট গল্প, নাটক, অনুবাদ, জার্নাল, জীবনীমূলক বই ইত্যাদি মিলিয়ে তার গ্রন্থভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৭টি। সামাজিক আন্দোলনে উদ্যোগী ভূমিকার জন্য তিনি দেশব্যাপী অভিনন্দিত। ডেঙ্গু প্রতিরোধ আন্দোলন, পরিবেশ দূষণবিরোধী আন্দোলনসহ নানা সামাজিক আন্দোলন তার নেতৃত্বে প্রাণ পেয়েছে। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ২০০৫ সালে একুশে পদক পান। ২০০৪ সালে তিনি রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ করেন। ২০১২ সালে প্রবন্ধে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।

জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও নানা রঙ আর সৌরভের ফুল নিয়ে ভক্ত-অনুরাগীরা তারই প্রতিষ্ঠিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে তাকে শুভেচ্ছা জানাবেন। সন্ধ্যায় কাটা হবে কেক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button