#মোঃ হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহের চোখঃ
অবৈধ্য দখলদারদের দখল উৎসব, আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে দিনের পর দিন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পৌর শহরের আড়পাড়ার অপদার খালটি। এই খালটি অনেকে পরামানিক পাড়ার খাল বলে।
এক সময় এই খাল দিয়েই চিত্রা নদিতে যেত দেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের সবচেয়ে ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকলের বর্জ্যরে পানি। খালটি চিত্রা নদির সাথে সংযোগ থাকার কারনে আড়পাড়ার মাঠে পানিও এই খাল দিয়ে চিত্রা নদিতে পড়তো। খালের ভেতর দেয়াল দিয়ে নির্মান করা হয়েছে আবাসিক ইমারতসহ দোকান পাট।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের প্রান কেন্দ্র দিয়ে বয়ে যাওয়া ২ কিঃ মিঃ ওয়াপদা খালটি শহরের আড়পাড়ার গ্রামের পরামানিক পাড়া উৎপত্তি স্থল এখান থেকে মহিলা কলেজের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে হাসপাতালের নিকটবতী চিত্রা নদীতে মিশেছে। ওয়াপদা খালটি এখন মৃত্যু প্রায় অবৈধভাবে দখল করে খালের দু’পাশে বাড়ি এবং অবশিষ্ট অংশ ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে খালটি। বর্জ্য ফেলায় দূর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত ফলে দুপাড়ের বাসিন্দাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঐ অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পানি নিষ্কাকনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষকাল আসলেই পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে শহরের একাংশ।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ার কারনে আগাছা ও ঘন বন জঙ্গলে পরিপূর্ন হয়ে গেছে বোঝার উপায় নেই যে এটা একটা খাল। দু-পাড় দখল বড় বড় ইমারত আর দোকান পসরা বসিয়েছে অবৈধ দখলদাররা। অন্যদিকে ময়লা, আবর্জনা আর বর্জ্য ফেলে পরিবেশন দুষন হচ্ছে। এখান থেকেই ডেঙ্গু মশা, মাছি সহ নানান পোকামাকড়। রোগ ব্যাধীতে আক্রান্ত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। বর্ষাকাল এলেই চিত্র পাল্টে যায়, খাল দিয়ে পানি নদীতে প্রবাহের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় খালের দুকুল ছাপিয়ে বসত বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে তলিয়ে যায় শহরের নি¤œ অঞ্চল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ এই সব জলাশয় গুলো তদারকি করার কেউ না থাকায় যার যা ইচ্ছে করছে। অচিরেই এলাকাবাসীর দাবী প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা সকল জলাশয় মুক্ত করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে।
তারা আরো জানায়, যদি কেউ খালের জায়গা দখল করে বসত বাড়ি নির্মাণ করে আর এ বিষয়ে ভূমি অফিসে অভিযোগ দিলে অফিসের লোকজন সরেজমিনে তদন্ত করে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। খালের এই নীতি অনুসারে খালটি অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে পূনরভাবে খনন করে পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা নিবেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এমনটাই আশা করেন এলাকাবাসী ।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের সবচেয়ে বানিজ্যিক শহর কালীগঞ্জ। কালীগঞ্জের প্রাণকেন্দ্রে এ খালটি দখলদাররা দীর্ঘদিন ধরে দখল করে নিয়ে ঘরবাড়ি তৈরী এবং বর্জ্য ফেলে পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করেছে। এটা অনেক আগেই দখলমুক্ত করা উচিৎ ছিল যাই হোক যত দ্রæত সম্ভব অবৈধ দখলদারদের হাতত থেকে খালটি দখলমুক্ত করে খনন করা হবে। যাতে খুব সহজেই মাঠের পানি এবং শহরের জমে থাকা পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চিত্রা নদিতে পড়তে পারে এবং খাল ধার দিয়ে মানুষের পায়ে হাটা দৃষ্টি নন্দন রাস্তা নির্মানের পরিকল্পনা আছে। আর এই রাস্তা দিয়ে যাতে নিরাপদে রোগী, বয়বৃদ্ধরা সকাল বিকাল হাটাহাটি করতে পারে।
কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল বলেন, অত্যান্ত গ্ররুত্বপূর্ণ এই খালটি বিভিন্ন সময় দখলদারেরা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তুলেছে। খালটিতে ২৫/৩০ ফুট জায়গা থাকার কথা কিন্তু দখলদারদের দখল উৎসবের কারনে এখানে একটি ড্রেনের জায়গা নাই সব দখল করে নিয়েছে। এই খালটি দখলমুক্ত করতে আমরা সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ, পৌর পরিষদ, উপজেলা পরিষদসহ সকলকে সাথে নিয়ে এই খালটি দখলমুক্ত করতে হবে।