নার্ভাসনেস কাটিয়ে উঠবেন যেভাবে
#ঝিনাইদহের চোখঃ
অনেকেই আছেন যারা অল্পতেই নার্ভাস হয়ে যান। নতুন কোনও মানুষের সঙ্গে আলাপের সময় বা কোনও নতুন কাজ শুরুর আগে নার্ভাস বোধ করেন।
এমন আরও অনেক কারণ আছে যেগুলি আমাদের মাঝে মধ্যেই নার্ভাস করে দেয়। সাধারণত নার্ভাস হয়ে গেলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। শরীরে অ্যাড্রিনালিনের ক্ষরণ বেশি হলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এটি প্রতিদিনের অভ্যাস হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ বাড়াবাড়ি আকার নিলে তা হার্টের অসুখে পরিণত হতে পারে। তবে আপনার নার্ভাস হওয়া যদি কোনও অসুখের কারণে না হয়, তাহলে কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা কাগে লাগিয়ে ঘাবড়ে যাওয়া অবস্থাকে কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
১) নিয়মিতভাবে শরীরচর্চা করতে হবে। এর মাধ্যমে শরীরে ও মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন সঠিক ভাবে হবে। ফলে সহজেই স্ট্রেস কেটে যাবে।
২) রোজ অন্তত ২০ মিনিট ধ্যান বা মেডিটেশন করতে হবে। এর ফলে অবসাদ, উৎকণ্ঠা, অনিদ্রা সহজেই কেটে যাবে।
৩) কখনও নার্ভাস বোধ হলে ঠোঁটের ওপর আলতো করে আঙুল বোলাতে হবে। আমাদের ঠোঁটে অনেক প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্তু থাকে। ঠোঁটের ওপর আলতো করে আঙুল বোলালে এই সব স্নায়ুতন্তু ক্রিয়াশীল হয়ে উঠে ও স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
৪) নার্ভাস বোধ করলে বুক ভরে গভীর ভাবে শ্বাস নিতে হবে। বড় বড় শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে। যতটা সময় নিয়ে শ্বাস নিচ্ছেন, তার দ্বিগুণ সময় ধরে শ্বাস ছাড়তে হবে। এতে অনেকটা স্বাভাবিক বোধ করবেন।
৫) প্রাণ খুলে হাসতে হবে। হাসলে ভাল হরমোন বেশি মাত্রায় ক্ষরিত হয়। ফলে হাসলে অবসাদ, উত্কণ্ঠা সহজেই কেটে যাবে।
৬) যখন খুব নার্ভাস লাগবে তখন পছন্দের গান শুনতে হবে, সিনেমা দেখুন বা বই পড়ুন। দেখবেন, মনের চঞ্চলতা ধীরে ধীরে কেটে যাবে।
৭) যদি কখনও নার্ভাস বোধ করেন তখন নাচ, গান, ছবি আঁকা, কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজানো, বাগান করা বা রান্না করার মতো কাজে নিজেকে ব্যস্ত করুন। দেখবেন, অবসাদ, উৎকণ্ঠা সহজেই কেটে যাবে।
যেসব খাবার নার্ভাসনেস কাটাতে সাহায্য করবে
মধু
বেড়ে যাওয়া হৃদস্পন্দনকে অনেকটা কমিয়ে দেয় মধু। এক চামচ মধু লেবুর পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন খান, ফল পাবেন।
ম্যাগনেশিয়াম
ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ শাক-সবজি-ফল ইত্যাদি যেমন আপনাকে হার্টের অসুখ থেকে বাঁচাবে, তেমনই আপনাকে অযথা উত্তেজিত করে তুলবে না। পালংশাক, কলা, দই, সবুজ সবজি ইত্যাদি নার্ভাস অবস্থাকে কাটিয়ে তুলবে।
দারচিনি
শরীরের অযাচিত কোলেস্টেরলকে বের করে দিয়ে রক্তের প্রবাহকে বাড়িয়ে দেয় দারচিনি। এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়াম যা হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে তা ব্লাড প্রেসারকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। উষ্ণ গরম জলে এক চা চামচ দারচিনি গুড়ো মিশিয়ে তা খেলে উপকার পাবেন।
পাকা পেয়ারা
সকালে খালি পেটে প্রতিদিন একটি করে পেয়েরা খেতে পারলে তার চেয়ে ভালো কিছু আর হয় না। অনিয়মিত হৃদস্পন্দনকে ঠিক করে অযথা উত্তেজনা কমে যায় পেয়ারা খেলে।
মাছের তেল
হার্টের অসুখ যাদের রয়েছে, তাঁরা মাছের তেলের বড়া খেলে উপকার পাবেন। হঠাৎ করে হার্টের উত্তেজিত হওয়া আটকানো যায় এই টোটকায়।
আঙুর ও লেবুর রসঃ নিয়মিত আঙুরের রস খেলে নার্ভাস হওয়া বা হঠাৎ হঠাৎ হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রিত হবে। এক কাপ গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিয়মিত খেলে বা নানা খাবারে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে নার্ভাস হওয়া থেকে মুক্তি পাবেন।
ভ্যালেরিয়ান
এই জাতীয় গুল্ম পানিতে ফুটিয়ে সেই রস রেখে দিতে পারেন। সেটা থেকে এক চা চামচ করে এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে হার্টের সমস্যায় যেমন সুফল পাবেন তেমনই ঘাবড়ে যাওয়াও কমবে।