ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহে ঐহিত্যবাহী ঝাপান খেলা অনুষ্ঠিত (ভিডিও-সহ)

#ঝিনাইদহের চোখঃ

বাদ্যের তালে তালে হাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছে বিষধর গোখরা সাপ। আর সাপুড়ে সেই সাপের সর্বোচ্চ ফনা তোলাতে দেখাচ্ছেন নানা অঙ্গভঙ্গি। সেই সাথে পরিবেশন করা হচ্ছে মনসামঙ্গলের পালাগান।

অন্য সাপুড়ে সাপের ফনা নামাতে দিচ্ছেন ঝাড়ফুক। এমনই ঝাপান খেলার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামে।

গোপিনাথপুর গ্রামের যুবসমাজের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ঝাপান খেলার। যেখানে দুপুর থেকেই আসতে শুরু করে শত শত নারী পুরুষ।সবার একটাই উদ্দেশ্যে ঝাপান খেলা দেখা। দুপুরের পর থেকে শুরু হয় ঝাপান খেলা। সাপুড়ের ইশারায় সাপের এই অঙ্গ ভঙ্গি প্রদর্শন মানুষকে দেয় অনাবিল আনন্দ।

বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, শিশুরা উপস্থিত থেকে নিবিড় দৃষ্টিতে উপভোগ করেন এই খেলা। আর খেলাকে ঘিরে এখানে সৃষ্টি হয় উৎসবের আমেজ। ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপা উপজেলার থেকে আসা ৬ সাপুড়ে দলের অর্ধ শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত। আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শনার্থীরা।

গোপিনাথপুর গ্রাম থেকে আসা সরকারি কেসি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল মিম বলেন, আমি ঝাপান খেলার কথা শুনেছি কিন্তু কোন দিন দেখিনি। আজ দেখতে পেরে বুঝলাম বাংলার ঐতিহ্য কত অপরুপ। শৈলকুপা থেকে আসা সাহেব উদ্দিন বলেন, ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে গ্রামে একবার দেখেছিলাম ঝাপান খেলা।

অনেকদিন পর ঝাপান খেলা দেখে আবার ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল। ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার পরাগ হোসেন বলেন, বাংলার ঐতিহ্য যে এত মনোমুগ্ধকর তা না দেখলে বোঝা যাবে না। ঝাপান খেলা দেখে আজ তা বুঝতে পারছি।

শহরের আদর্শপাড়ার আকরাম হোসেন বলেন, এ ধরনের আয়োজন যদি বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে করা হতো তাহলে বর্তমান প্রজন্ম বাংলার আদি রূপ সম্পর্কে ধারনা পেত।

এ ব্যাপারে ঝাপান খেলার আয়োজন মিল্টন হোসেন বলেন, চিরায়ত বাংলার ঐহিত্যবাহী এ খেলা ধরে রাখতেই আজকের এই আয়োজন করা। প্রতিবছর এ ধরনের আয়োজন করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button