#ঝিনাইদহের চোখঃ
চাষ লাভজনক হওয়ায় ঝিনাইদহ জেলায় বিদেশি ফল ড্রাগনের চাষ বাড়ছে। প্রতি বছরই নতুন এলাকায় ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে উঠছে। তারা বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন বাগান গড়ে তুলছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তার সূত্রে জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে কালীগঞ্জ উপজেলায় ড্রাগন ফলের বাগান করেন বোরহান উদ্দিন খান। তিনি ড্রাগন চাষে সফল হন। তার দেখাদেখি আরো অনেকে ড্রাগন চাষে এগিয়ে আসে। তবে এ ফলের বাজার ঢাকাতে।
ঝিনাইদহ জেলায় এ পর্যন্ত ১২৪ বিঘা (১৬ হেক্টর) জমিতে ড্রাগনের বাগান গড়ে উঠেছে। গত বছর ২০০ টন ড্রাগন ফল উত্পাদিত হয়েছিল। কালীগঞ্জ উপজেলায় ৯ দশমিক ৬৯ হেক্টরে, সদর উপজেলায় সাড়ে তিন হেক্টরে, মহেশপুর উপজেলায় তিন হেক্টরে ও শৈলকুপা উপজেলায় দশমিক ২৬ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে উঠেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহারিয়া গ্রামে আব্দুল মান্নান জানান, তিনি সাড়ে তিন একর জমিতে ড্রাগন বাগান গড়েছেন। বাগানে ৯০০ গাছ আছে। তার বাগানের বয়স ১৪ মাস। বাগান করতে তার ব্যয় হয় পাঁচ লাখ টাকা। ৮-৯ মাস পর থেকে গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করে। ১০ মাস পর তিনি ফল বিক্রি শুরু করেন। এ পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। আরো ১ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন। ছোটো সাইজের ফল প্রতিকেজি ২০০ টাকা এবং বড়ো সাইজের ফল ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয় বাজারে এ ফলের চাহিদা নেই। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফল ধরে। শীতকালে ড্রাগন ফল ধরে না। ড্রাগন চাষে খরচ কম। বাগান তৈরির পর আর তেমন খরচ হয় না। শুধু পরিচর্যার খরচ। দ্বিতীয় বছর থেকে বেশি লাভ হতে থাকে।
কালীগঞ্জ উপজেলার বালিডাঙ্গা গ্রামের চাষি আশরাফ হোসেন বলেন, তিনি পাঁচ বছর ধরে ড্রাগন চাষ করছেন। গত বছর তার সাড়ে তিন বিঘার ড্রাগন বাগানের ফল বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা আয় করেছেন। খরচ হয়েছিল দেড় লাখ টাকা।
তিনি জানান, এবার আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় ফল কম হয়েছে। তিনি আরো জানান, বাগান তৈরির দ্বিতীয় বছর থেকে বেশি লাভ হতে থাকে। এক নাগাড়ে ৪০-৪৫ বছর পর্যন্ত লাভ হতে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পরিচালক জি এম আব্দুর রউফ বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে ড্রাগন ফলে লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরা ড্রাগন চাষে ঝুঁকছেন। ড্রাগন ফলের বাগানের পোকামাকড় রোগবালাইয়ের আক্রমণ খুব কম। একবার বাগান তৈরির পর পরিচর্যা করলে এক নাগাড়ে ৪০-৪৫ বছর ফল ধরে।