সাবজাল হোসেন, ঝিনাইদহের চোখঃ
১৭ দিন বয়সী মা হারা অসহায় শিশু সুমাইয়ার বাবা একজন নির্মান শ্রমিক।
প্রতিদিনের মজুরীতেই সংসার চলে তার। কিন্ত কোন দিন কাজ থাকে কোন দিন থাকে না। এদিকে মাঠে তার কোন চাষযোগ্য জমিও নেই। ফলে সারাবছরই অভাবের মধ্যে দিন কাটে তাদের।
এমন অবস্থায় গত ১৪ অক্টোবর জেলার কোটচাঁদপুর শহরের একটি ক্লিনিকে অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম হয় শিশু সুমাইয়ার। চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে ক্লিনিকেই মা বুলবুলির মৃত্যু হলেও এখনও বেঁচে আছে মা হারা সুমাইয়া। অভাবী বাবার সংসারে সুমাইয়ার প্রতিদিনের খাবার ও ঔষধ কেনা নিয়ে দারে দারে ঘুরছিলেন দাদী সুফিয়া বেগম।
খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে অসহায় সুমাইয়ার বাড়িতে হাজির হন কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি ফুটফুটে চেহারার সুমাইয়ার পরিবারের কাছে নগদ কিছু টাকা দিয়ে প্রতিমাসের খরচের ব্যয়ভার গ্রহনের ঘোষনা দিয়ে আসেন। শিশু সুমাইয়া ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বড় ঘিঘাটি গ্রামের দিনমজুর নায়েব আলীর মেয়ে।
সুমাইয়ার দাদী সুফিয়া বেগম জানান, আমার ছেলে নায়েব আলী রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করে সংসার চালায়। সব সময় কাজ না থাকায় অভাব তার সংসারের নিত্যসঙ্গী। এমন সময়ে ক্লিনিকের চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে সুমাইয়ার মা বুলবুলি মারা যায়। কিন্ত বেঁচে যায় নাতী সুমাইয়া। আমি নিজেও একজন অসুস্থ মানুষ। তারপরও কেউ না থাকায় এখন সুমাইয়ার দেখাশুনা আমাকেই করতে হচ্ছে। প্রতিদিন শিশুটির খাবার ও ঔষধ বাবদ বেশ টাকা লাগছে। যে টাকা জোগাড় করা আমার ছেলের পক্ষে খুবই অসম্ভব ব্যাপার। কেননা সুমাইয়ার জন্মের পর মাত্র ১৭ দিনে আমার ছেলেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা ধার করতে হয়েছে। এমন অবস্থায় পৌর মেয়র শিশুটির মুখের দিকে তাকিয়ে খরচের ভার নিয়ে একটি মহৎ কাজ করেছেন।
প্রতিবেশী মোমিনুর রহমান ও আলম হোসেন জানান, মা হারা শিশুটিকে নিয়ে দিনমজুর নায়েব আলী ও তার পরিবার চরম বেকায়দায় পড়েছিল। এমন অবস্থায় শিশুটির পাশে দাড়িয়ে পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ মহত্বের পরিচয় দিয়েছেন।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম জানান, মা হারা শিশুটির বাড়িতে গিয়ে চরম খারাপ লেগেছে। তিনি যতটুকু করেছেন সমাজের একজন মানুষ হয়ে দায়বদ্ধতা থেকে করেছেন। তিনি অব্যবস্থাপনায় ভরা ক্লিনিকগুলো যেগুলোর কারনে সুমাইয়রা মা হারা হচ্ছে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।