কীভাবে বুঝবেন আল্লাহ আপনার প্রতি সন্তুষ্ট কি না?
আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রতিটি বিশ্বাসী হৃদয়ের একান্ত চাওয়া। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন বিশ্বপ্রভু আপনার ওপর সন্তুষ্ট কি না? আল্লাহ যখন কোনো বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, তখন তিনি তাকে সৎকর্মগুলো সম্পাদন ও অসৎকর্মগুলো থেকে দূরে থাকার তৌফিক দান করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেনÑ ‘যারা সৎপথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করে দেন এবং তাদের তাকওয়া দান করেন।’ (সূরা মুহাম্মদ : ১৭)। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেনÑ ‘যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে, আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে আছেন।’ (সূরা আনকাবুত : ৬৯)।
পক্ষান্তরে বান্দার সৎকাজে অনীহা প্রকাশ ও অসৎকাজে জড়িয়ে পড়া আল্লাহর অসন্তুষ্টির লক্ষণ। আবার আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন তার বক্ষকে সত্যদর্শনের জন্য প্রশস্ত করে দেন। পক্ষান্তরে যাকে অপছন্দ করেন তার বক্ষকে সিরাতে মুস্তাকিমের জন্য সংকীর্ণ করে দেন। আল্লাহ তায়ালা বলেনÑ ‘আল্লাহ যাকে হেদায়েত করতে চান, ইসলামের জন্য তার অন্তঃকরণ উন্মুক্ত করে দেন, আর যাকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তিনি তার অন্তঃকরণ অত্যন্ত সংকীর্ণ করে দেন, যেন মনে হয় সে আকাশে আরোহণ করছে। এভাবেই যারা ঈমান আনয়ন করে না তাদের আল্লাহ কলুষময় করে থাকেন।’ (সূরা আনআম : ১২৫)।
ইবনে আব্বাস (রা.) এ আয়াতে তাফসিরে বলেনÑ ‘আল্লাহ তাওহিদ ও ঈমানের জন্য তার হৃদয় প্রশস্ত করে দেন।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)। আর আল্লাহর সন্তুষ্টির আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে তিনি যখন কাউকে ভালোবাসেন, তখন অন্য বান্দাদের কাছেও তাকে প্রিয় করে দেন। রাসুল (সা.) বলেনÑ ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তিনি জিবরিলকে ডেকে বলেন, আল্লাহ অমুককে ভালোবাসেন। অতএব তুমিও তাকে ভালোবাস। তখন জিবরিল (আ.) তাকে ভালোবাসেন এবং আকাশবাসীর মাঝে ঘোষণা করে দেন, আল্লাহ অমুককে ভালোবাসেন। অতএব তোমরাও তাকে ভালোবাস। অতঃপর আকাশবাসী তাকে ভালোবাসতে থাকেন। আর পৃথিবীতেও তার জন্য গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেওয়া হয়।’ (মুসলিম)।
ইমাম নববি এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেনÑ ‘মানুষের অন্তরে তার জন্য ভালোবাসার উদয় করে দেওয়া হয়, ফলে সবাই তার দিকে ঝুঁঁকে পড়ে।’
অতএব আমাদের কর্তব্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে প্রয়াসী হওয়া।