ঝিনাইদহ জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা রোকেয়া খাতুন
ঝিনাইদহের চোখঃ
শিক্ষা ও চাকরিতে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সলিমুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রোকেয়া খাতুন। ৩৮ বছরের শিক্ষকতার স্বীকৃতি পেলেন এ বছর তিনি। চলতি বছরের ঝিনাইদহ জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন রোকেয়া খাতুন।
রোকেয়া খাতুন ১৯৪৭ সালে ময়মনসিংহ জেলার মধুপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৪ ভাই-বোনের সংসারে তিনি ছিলেন চতুর্থ সন্তান। তার বাবার পক্ষে তাদের লেখা-পড়াসহ সংসার চালানো খুবই কষ্টকর ছিল। ১৯৬৩ সালে তিনি এসএসসি পাশ করেন। এরপর খুলনাতে দাদা-দাদির বাড়ি চলে আসেন এবং বিএল কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার আগেই তার পরিবার বিয়ে দিয়ে দেন। তখন তার স্বামী নুরুল ইসলাম ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।
শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ অনুকূল থাকায় তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে লেখাপড়ার সুযোগ পান। ১৯৬৬ সালে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ১৯৬৯ সালে বিএ পাশ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি কালীগঞ্জ সলিমুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বিএড করেন এবং চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯১ সালে প্রাইভেটে এমএ পাশ করেন। একই বছর তার ছেলেও রকিবুল ইসলাম মিল্টন এমএ পাশ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৩৮ বছর সলিমুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালনকালে হাজার হাজার ছাত্রীকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন।
তার ছাত্রীরা আজ অনেকেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবনে আলো জ্বেলে ২০০৭ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি চাকরি থেকে অবসর নিয়েও বসে নেই। তিনি ছোট ছোট শিশুদের শিক্ষায় নিয়জিত আছেন। বর্তমানে তিনি জাপানভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর আওতায় একটি স্কুল সুনিকেতন পাঠশালাতে প্রিন্সিপাল হিসাবে কর্মরত আছেন। একনিষ্ঠতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন সময়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে সম্মাননা পেয়েছেন।
বর্তমানে তার একমাত্র ছেলে রকিবুল ইসলাম মিল্টন কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। একমাত্র মেয়ে কালীগঞ্জ শাহনাজ পারভিন সলিমুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত।
রোকেয়া খাতুনের স্বামী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম কালীগঞ্জ কলেজ, ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজ, যশোর সরকারি এম এম কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন।