ঝিনাইদহে গ্রামীণ খেলাধূলা, পিঠা মেলা অনুষ্ঠিত
সাজ্জাদ আহমেদ, ঝিনাইদহ
গ্রামীণ নারীদের বহুমাত্রিক ভূমিকা ও অবদানকে যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়ার জন্য আন্দোলন চলছে যুগ যুগ ধরে। সমাজের অগ্রগতিতে গ্রামীণ নারীর অবদান অনস্বীকার্য। কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র দূরীকরণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীর ভূমিকার প্রতি স্বীকৃতিস্বরূপ এবং পরিবার ও সমাজে গ্রামীণ নারীর অবস্থার মূল্যায়নের লক্ষ্যেই প্রতি বছর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালন করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহে কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে গ্রামীণ পর্যায়ে র্যালী, আলোচনা সভা, গ্রামীণ খেলাধূলা, বীজ সংরক্ষণ, হস্তশিল্প, পিঠা মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গ্রামীণ পর্যায়ে র্যালী, আলোচনা সভা, গ্রামীণ ঐতিহ্যসমূহ উপস্থাপন সহ নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন উন্নয়ন ধারার পিএফএসএসএ প্রকল্প সমন্বয়কারি হায়দার আলী।
স্বাধীন কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি খুরশীদ আলম রুবায়েত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন ডেফলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষক সুজন কুমার, আরিফইকবাল, রকিবুজ্জামান, সাংবাদিক সাজ্জাদ আহমেদ, উন্নয়ন কর্মি আয়াতউল্লাহ, উন্নয়ন ধারার পিএফএসএসএ প্রকল্প সমন্বয়কারি হায়দার আলী, সহযোগী সমন্বয়কারী (ডক্যুমেন্টেশন এ- কমিউনিকেশন) কৃষ্ণ দাস সাহা, আতিয়ার রহমান, প্রোগ্রাম অর্গানাইজার আসাদুজ্জামান, স্বাধীন কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সোনিয়া আহমেদ, নুরুল ইসলাম, মোবারেক হোসেন মৃধা, মাওলাদ হোসেন, ইছাহক আলী, রাবেয়া খাতুন সহ বিভিন্ন স্তরের কৃষক নেতাকর্মীবৃন্দ।
এসময় নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে গ্রামীণ নারী কৃষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ।পনের অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষ্যে ঝিনাইদহের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উন্নয়ন ধারার সহযোগিতায় গড়ে ওঠা স্বাধীন কৃষক সংগঠন এর ঝিনাইদহ সদর, শৈলকুপা ও মাগুরা সদর অঞ্চলের উদ্যোগে ও তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গ্রামীণ খেলাধূলা, গ্রামীণ বীজ সংরক্ষণ, নারীদের হস্তশিল্প, পিঠাপুলির আয়োজন, গ্রামীণ নাচ-গান,গিত,চাটুকার এবং লোকথিয়েটার ঝিনাইদহের উপস্থাপনায় সমস্যা জর্জরিত কৃষকসমাজের জীবনকথার আলেখ্যে রচিত নাটক “মেহেরজানের স্বপ্ন” মঞ্চায়ন এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশ উক্ত দিবস পালিত হয়।
গৃহস্থালীর সকল কাজের পাশাপাশি গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগী-কবুতর পালন, বসতভিটায় শাক-সব্জি ও ফলমূল উৎপাদন, বীজ সংরক্ষণ, শস্য মাড়াই ও মাড়াই পরবর্তী কার্যক্রম, খাদ্যশস্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ কৃষিপণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে পরিবারের খাবার টেবিল বা বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বেশিরভাগ কাজই নারীরা করে থাকেন। এমনকি খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়েও তাদের অবদান কম নয়। সরকার বা নীতিনির্ধারকগণ জাতীয় অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করলেও সেখানে গ্রামীণ নারীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে না। গ্রামীণ নারীর কাজের মূল্যায়ন এবং সুযোগ সৃষ্টির ফলেই মিলবে ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে নিষ্কৃতি এবং সম্ভাবনা থাকবে দেশের উন্নয়নের চুড়ায় পৌঁছানোর।