অন্যান্য

বোতলের দুধে শিশুর ভয়াবহ শারীরিক ক্ষতি

ঝিনাইদহের চোখ ডেস্ক:

সন্তানের যতেœর বিষয়ে বরাবরই অভিভাবকরা সচেতন থাকেন। তবু কিছু অজানা কারণে কয়েকটা ভুল করে ফেলি আমরা। জন্মের পরে শিশুর জন্য মায়ের দুধ অপরিহার্য। মায়ের জন্য তার সন্তানকে প্রথম কোলে তুলে নেওয়ার পর থেকে প্রতিটি মুহূর্তই বিশেষ। তবু মায়ের জন্য সবচেয়ে মানসিক প্রশান্তির মুহূর্তটি হলো যখন তিনি সন্তানকে বুকের দুধ পান করান। এর মধ্য দিয়ে মা ও শিশুর মধ্যে একটি শক্তিশালী শারীরিক ও মানসিক সংযোগ তৈরি হয়।অনেক মা চাকরিজীবি হওয়াতে বুকের দুধ খাওয়াতে শিশুর প্রতি অবহেলা করে থাকেন। তার বিকল্প হিসেবে বেছে নেন বোতল বা ফিডারের দুধ। কিন্তু তোলা দুধ শিশুর শরীরের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর। চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের দাঁতের ক্ষয়ের অন্যতম কারণ সারাক্ষণ বোতলের দুধে অভ্যস্ত করা। আসুন জেনে নেই ফিডারের দুধ শিশুর শরীরে কী কী ক্ষতি করছে।

বোতলের দুধের রাবারের ঢাকনা
বোতলের মুখে থাকা রবারের ঢাকনাকে প্রায় সব শিশুই কামড়াতে থাকে। বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি হলেও রবারজাত দ্রব্য বেশি ক্ষণ শিশুর মুখে না রাখাই উচিত বলে মত শিশুচিকিৎসকদের। যা শিশুর জন্য মারত্মক ক্ষতির কারণ। বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি হলেও রাবারজাত দ্রব্য বেশিক্ষণ শিশুর মুখে না রাখাই শ্রেয় বলে মনে করে বিশেজ্ঞরা।

লিভার ও হজম প্রক্রিয়া
এক ব্ছর বয়সী শিশুদের শারীরক গঠনের জন্য প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। কিন্তু বোতলের দুধে অভ্যস্ত হওয়ার কারণে তা শিশুর লিভার ও হজম প্রক্রিয়ায় ক্ষতি করছে। সস্তা প্লাস্টিকের বোতলে বিসফেনল-এ (বিপিএ) নামের যে রাসায়নিক উপাদান থাকে তা শিশুর লিভার, ত্বক ও অন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। প্লাস্টিকের দ্রব্যের বিষাক্ত হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ এই বিপিএ। যদিও কিছু নামী বোতল প্রস্তুতকারী সংস্থার বোতলবিসফেনলমুক্ত, তবু প্লাস্টিকের বোতল বেশি ক্ষণ শিশুর সংস্পর্শে না রাখাই উচিত।

সংক্রমণ
যে ফিডারে শিশু দুধ খেয়ে থাকে তা অবশ্যই গরম পানির দিয়ে চুলায় ফোটাতে হবে। পর হাওয়ায় শুকাতে হবে।যদি তা না করা হয় তবে শিশুর শরীরে সংক্রমণ আসতে পারে।

বোতলের দুধে আসক্ত
প্লাস্টিকের বোতলে দুধ খাওয়ার শিশুর আসক্তিতে পরিণত হয়। ফিডারে দুধ খাওয়া সহজ ও আরামদায়ক হওয়ায় অনেক শিশুই একটা সময়ের পর বোতলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। তখন কিছুতেই তাকে আর বোতলে করে দুধ খাওয়া ছাড়ানো যায় না। বোতলের সাহায্য ছাড়া ঘুমও আসে না তার।

মায়ের বুকের দুধ
শিশুর জন্য উত্তম হচ্ছে মায়ের বুকের দুধ। চিকিৎসকদের মতে, যত দিন সম্ভব মায়ের বুকের দুধই শিশুকে দিন। তার পর অভ্যাস করুন কাচের বা কাঁসার বাটিতে দুধ নিয়ে তা ঝিনুকে করে খাওয়াতে। রুপোর ঝিনুক এ ক্ষেত্রে উপকারী। একান্তই রুপোর ঝিনুক না থাকলে ভাল মানের স্টিলের ঝিনুকও ব্যবহার করতে পারেন। এগুলি বোতলের চেয়ে উপকারী। দাঁতের ক্ষয়

চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের দাঁতের ক্ষয়ের অন্যতম কারণ সারা ক্ষণ বোতলের দুধে অভ্যস্ত করা। সাধারণত, যে সব শিশুর সবে দাঁত উঠছে, তাদেরও দিনের প্রায় বেশির ভাগ সময়ই মুখে বোতল দিয়ে রাখেন মায়েরা। দুধ জাতীয় দ্রব্যের মিষ্টতা ও দুধ শুষে খাওয়ার জন্য রবারের ঢাকা দীর্ঘ ক্ষণ শিশুর মুখের মধ্যে থাকায় এই সমস্যা হয়।

দুধ খাওয়ানোর আগে বোতল পরিষ্কার করতে ভাল করে ফোটানো, বাইরের কাপড় ব্যবহার না করে হাওয়ায় শুকনো করা ইত্যাদি অনেক সময়সাধ্য পদক্ষেপ নিতে হয়। সেই সব পদক্ষেপ যথোপযোগী না হলে শিশুর শরীরে সংক্রমণ আসতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button