করোনায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সেবন বাড়ায় মৃত্যুঝুঁকি, দাবি গবেষকদের
ঝিনাইদহের চোখঃ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া নিবারক ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের প্রয়োগে কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায় বলে যে আলোচনা ওঠেছে তা নাকচ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। তাদের দাবি, এটি কোনোভাবেই করোনা প্রতিরোধ বা নিরাময়ে ভূমিকা পালন করতে পারে না। বরং এটি সেবনে করোনা রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে করোনায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সেবনে মৃত্যুর হার বেশি।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রবীণ কর্মকর্তাদের শরীরে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন কতটা কাজ করেছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে একটি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। ওই গবেষণা নিবন্ধ ও তার ফল প্রকাশিত হয়েছে একটি মেডিকেল সাইটে। তবে তাদের এই গবেষণাটির ফলাফল এখনো যাচাই করা হয় নি।
যুক্তরাষ্ট্রের একদল চিকিৎসাবিজ্ঞানি গত ১১ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সুস্থ কিংবা মৃত্যুবরণ করা ৩৬৮ জনের মেডিকেল রিপোর্ট যাচাই করে এই গবেষণ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। গবেষণা প্রতিবেদনে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে তারা উল্লেখ করেছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সেবন করা রোগীদের মৃত্যুর হার ২৮ শতাংশ। অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন সেবনকারীদের মৃত্যুহার ২২ শতাংশ। যারা সাধারণ চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুহার ১১ শতাংশ।
করোনার প্রতিষেধক হিসেবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি নিশ্চিতভাবে প্রতিরোধ করতে পারে; এমন কোনো ওষুধের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। তাই করোনাভাইরাসের চিকিৎসা, বিশেষ করে ড্রাগ থেরাপি নিয়ে বিতর্ক চলছে। এক্ষেতে হাইোড্রক্সিক্লোরোকুইন প্রয়োগে সাফল্যের দাবি জানায় বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা।
ফ্রান্স থেকে প্রকাশিত একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে করোনা প্রতিরোধে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ইতিবাচক কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এর আগে জানানো হয়েছিল। এছাড়া চীন থেকেও এই দুই ওষুধের কার্যকারিতার কথা জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ১১টি হাসপাতালে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।
কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনা আক্রান্ত যেসব রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ তাদের জন্য অ্যাজিথ্রোমাইসিনসহ কিংবা ছাড়া হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবনের পরামর্শ দেয়া শুরু হলেও গবেষকরা বলছেন, এতে করে মৃত্যু ঝুঁকি আরও বাড়ার শঙ্কাই বেশি।
এছাড়া মার্কিন অর্থায়নে করা এই গবেষণায় দেখা যায়, যারা অন্য অ্যান্টিবায়োটিক নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৭ শতাংশ রোগীকে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যার জন্য ভেন্টিলেশনে পাঠাতে হয়েছে। অপরদিকে শুধু হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করা হয়েছিল যে রোগীদের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়েছে ১৪ শতাংশের।