অন্যান্য

রাজনীতিতে না এলে সাংবাদিকতা করতাম: শেখ তন্ময়

রাজনীতিতে নেমেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। বাগেরহাট-২ আসনে পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। ভোটের লড়াইয়ে নামতে প্রস্তুত হচ্ছেন। নানাভাবে যাচ্ছেন জনতার কাতারে। তিনি শেখ সারহান নাসের তন্ময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সন্তান। তাকে রাজনীতিতে পেয়ে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা যেমন উজ্জীবিত, তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রভাব স্পষ্ট। সুদর্শন এই তরুণকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

প্রতীক বরাদ্দ না হওয়ায় এখনো আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়নি। ফলে কিছুটা ফাঁকা সময় আছে এখনো। এর মধ্যে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নিজের ভাবনা, চিন্তা, এত দিন কী করেছেন, তা তুলে ধরেছেন তিনি।

রাজনীতিতে আসা প্রসঙ্গে শেখ সারহান নাসের তন্ময় বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ উপলব্ধি করে বড় হয়েছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (বড় ফুফু) অনুপ্রেরণায় রাজনীতি করতে আগ্রহী হয়েছি। তা ছাড়া আমার ছোট ফুফু শেখ রেহানা রাজনীতিতে আসতে আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। আর বাবা শেখ হেলাল উদ্দীন তো রাজনীতিতে দুই যুগ থেকে আছেনই। শৈশব থেকে পরিবারের মধ্যে দেখে আসা রাজনীতির চর্চা আমাকে রাজনীতিতে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

তিনি বলেন, আমি নিজে যে কোনো দিন রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ব, তা ভাবতে পারিনি। রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভালোবাসা পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমাকে পেয়ে তারা (জনগণ) অনেক প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করছেন। আমি যাতে রাজনীতিতে এই বাগেরহাটে সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে পারি, তারা এমনটাই প্রত্যাশা করছেন।

রাজনীতিতে না এলে কী করতেন, জানতে চাইলে শেখ তন্ময় বলেন, আমি সাংবাদিকতা বিভাগের একজন ছাত্র ছিলাম। ছাত্র অবস্থায়ই কলাম লিখতাম। আমার উচ্চতর ডিগ্রিটাও সাংবাদিকতার ওপর করেছি। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যম জাতির চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে না এলে হয়তো আমি সাংবাদিকতায় থাকতাম অথবা ক্রিকেটার বা সংগীতশিল্পী হতে পারতাম। আমার পরিবারের সদস্যরা রাজনীতির বাইরে এসে সাংবাদিকতা, খেলাধুলায় অবদান রেখেছেন। আমি হয়তো রাজনীতি করি না বা মাঠে ভালো স্লোগান-বক্তব্য দিতে পারি না। কিন্তু আমার পরিবার থেকে শেখানো হয়েছে, ‘যা জানো তা দিয়ে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করো।’ আমি সেটাই করব।

গণমাধ্যমের কাছ থেকে কী আশা করেন, জানলে চাইলে শেখ তন্ময় বলেন, গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন, তাদের সবার একটি দায়িত্ব আছে, আমি যদি ভুল করি, তা ধরিয়ে দেওয়া। ভালো কাজ জনগণের মাঝে তুলে ধরা। আজকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের কিছু মতপার্থক্য থাকতে পারে, বিরোধী দল আছে, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আছে। আজ দেশকে সাম্প্রদায়িক শক্তি থেকে বের করে নিয়ে এসে তরুণদের সঙ্গে নিয়ে সুন্দর সম্ভাবনাময় দেশ উপহার দিতে চাই।

আবার বলি, আমার ভুলত্রুটি হলে তা ধরিয়ে দেবেন, আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে যাব। বাগেরহাটের মানুষ কীভাবে শান্তিতে থাকতে পারে, স্থানীয় জনগণ যেন তাদের উন্নয়নটা বুঝে নিতে পারে, তার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে সামনে এগোতে চাই। আপনারা বাগেরহাটের মানুষ, আপনারা জানেন এখানকার মানুষের কী প্রয়োজন আছে কী প্রয়োজন নেই। আমি আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হই বা না হই, আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আগামীতে এখানেই থাকতে চাই।

নির্বাচিত হলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে শেখ তন্ময় বলেন, আমি তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি। প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ আমাকে বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া) আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের কিশোর-তরুণেরা যাতে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে পারে, সে জন্য আগামীতে প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ^বিদ্যালয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সরকার আবার ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে, তরুণদের বেকারত্ব ঘোচাতে, তাদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন এলে মানুষের মধ্যে একটা ভয়ভীতি কাজ করে। ২০০১ সালের পয়লা অক্টোবরের নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপি জোটের বিজয়ের পর দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা-নির্যাতন করা, জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হয়নি। তবে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ গত কয়েকটি নির্বাচনের তুলনায় অনেক ভালো। বর্তমান সরকার নির্বাচনের জন্য সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করেছে।

উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, জনসংযোগ করছেন। তাদের আমরা কোনো বাধা দিচ্ছি না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button