ভিন্নধারার কথা সাহিত্যিক সাদত আল মাহমুদ!—এম মনসুর আলী (সাংবাদিক ও কলামিস্ট)
ঝিনাইদহের চোখ-
ভিন্ন ধারার কথাসাহিত্যিক সাদত আল মাহমুদ এর আজ ৪৪ তম জন্মদিন। তিনি এক নভেম্বর ১৯৭৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরের ডুবাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মু. আব্দুর রাজ্জাক প্রথমে স্কুল শিক্ষক পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা অফিসার হয়ে অবসরে যান। মাতা গৃহিণী। ছয় ভাই-বোন এর মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক।
তার লেখা গল্প-উপন্যাস-শিশুতোষ পড়লে তাকে একজন লেখার জাদুকর বললে বেশি বলা হবে না। কথা সাহিত্যিকের পাশাপাশি তিনি নাট্যকার, প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক।
তিনি দৈনিক মুক্তকন্ঠ, নয়া দিগন্ত, ইনকিলাব, সমকাল, ঢাকা ট্রিবিউন, সকালের খবর, বর্তমান, প্রতিদিনের সংবাদ, বাংলাদেশের খবর ও দেশ রূপান্তর পত্রিকায় বিভিন্ন সম্মান জনক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বহুল প্রচারিত দৈনিক খোলা কাগজ ও পরিবর্তন ডটকমে মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাদত আল মাহমুদ একজন স্বপ্নদ্রষ্টা লেখক। তিনি তার লেখনির মাধ্যমে মানুষকে একটি সুন্দর পরিপাটি ঝকঝকে সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখান। সাদামাটা সহজ-সরল, নিরহংকার মনের অধিকারী সাদত আল মাহমুদ যুব সমাজকে দেশ প্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে দুই যুগ ধরে লিখে চলেছেন। সমাজের ছোট ছোট সুখ আর বড় বড় দুঃখকে পরম আদরে সাহিত্য বানিয়েছেন। সমাজের অসঙ্গতি গুলোকে নিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তার লেখনির মধ্য দিয়ে। তার উপন্যাস গুলো আকাশচুম্বী জন প্রিয়তা না পেলেও প্রতিটি উপন্যাস অধিক জনপ্রিয়তা পাওয়ার দাবি রাখে। ‘চিতার আগুনে’ উপন্যাসটি সাদত আল মাহমুদের প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ। তার একাধিক প্রকাশিত জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর মধ্যে ইতিহাস ভিত্তিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস যথাক্রমে এক আনা মন ও রাজাকারকন্যা, প্রসব বেদনা, রমনীদ্বয় অন্যতম। তার প্রতিটি উপন্যাসের নাম করণ অদ্বিতীয় ও আকর্ষণীয়। তিনি শিশুদের জন্য লিখেছেন ভৌতিক গল্প ‘ভ‚ত ধরার অভিযান’ ও শিশুতোষ ‘গগেনদার গল্পের ঝুড়ি’ বইটি।
সাদত আল মাহমুদ কোনো বাজারি লেখক নন। তিনি বাজার ধরার জন্য বই লিখেননি এবং লিখছেনও না। তিনি সেলিব্রেটি লেখক হতেও চান না। তিনি তার লেখার মাধ্যমে সমাজের খারাপ দিক গুলো পরিমার্জিত-পরিবর্তিত করতে চান। তিনি তার গল্প-উপন্যাসের ফাঁকে ফাঁকে সমাজের অসঙ্গতি ও সমস্যাগুলো তুলে ধরেন যাতে সম্মানিত পাঠকগণ সেটা পড়ে সাহিত্যরসের মাধ্যমে মনে ধারণ করে সমস্যাগুলো সমাধানে অগ্রণী ভ‚মিকা রাখতে পারেন। তিনি অন্য দশজন লেখকের চেয়ে অনেকটাই ব্যতিক্রমি। বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র লেখক যিনি আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য গত তিন বছর যাবত পাঠাগার আন্দোলনের পাশাপাশি কয়েক লক্ষ টাকার বই বিতরণ করেছেন। অন্য কোনো লেখক নিজের টাকায় এমনটি করেছেন কিনা আমার জানা নেই। জন্মদিনে প্রিয় লেখককে শুভেচ্ছা জানাই। ভালো থাকবেন আপনি। বেঁচে থাকুন হাজার বছর মানুষের মনে। শুভ জন্মদিন।