সম্প্রীতির আহ্বান রাষ্ট্রপতির, দেশ গড়ার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘কঠিন চীবর দান’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে বৌদ্ধ সমাজের শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।’
তিনি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘মহামতি গৌতম বুদ্ধ একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় বিশ্ব গঠনে আজীবন সাম্য, মৈত্রী, মানবতা ও শান্তির অমিয় বাণী প্রচার করে গেছেন। তার আদর্শ ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল ও মানবিকতায় পরিপূর্ণ। বুদ্ধের অহিংস বাণী ও জীবপ্রেম আজও বিশ্বব্যাপী সমভাবে সমাদৃত। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে রাষ্ট্রপতি মনে করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে কঠিন চীবর দানোৎসব সকলের মধ্যে গড়ে তোলে ঐক্য, সংহতি ও সম্প্রীতি। ত্যাগ, সংযম, নিয়মানুবর্তিতা আর কঠোর ধ্যান সাধনার মাধ্যমে উদ্যাপিত ‘কঠিন চীবর দান’ ভক্তদের বুদ্ধের প্রকৃত অনুসারী হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য একথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, পাহাড়পুর, ময়নামতিসহ এ দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রাচীন বৌদ্ধবিহার এর উজ্জ্বল স্বাক্ষর বহন করছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল ধরে বয়ে চলা এ সম্প্রীতি আমাদের ঐতিহ্য। সম্প্রীতির এই ধারা অব্যাহত রেখে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আরো ত্বরান্বিত করতে আমি সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার উদাত্ত আহ্বান জানাই।’
রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করে বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা সবার জীবনে প্রতিফলিত হোক, সাম্য ও সৌহার্দ্যময় পৃথিবী গড়ে উঠুক। কঠিন চীবর দান উৎসব সবার জন্য বয়ে আনুক সুখ,শান্তি আর অনাবিল আনন্দ।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের শান্তির বাণী মানবজাতির কল্যাণ ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এ আপ্তবাক্য ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমি আশা করি, গৌতম বুদ্ধের অহিংসার বাণী ধারণ করে সামাজিক ঐক্য, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ একযোগে কাজ করবেন।’
তিনি ‘কঠিন চীবর দান’ ধর্মীয় উৎসবের সার্বিক সফলতা কামনা করেন।