সন্তানের জন্য হলেও ঝিনাইদহের স্মৃতি বাঁচতে চাই
আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঝিনাইদহের চোখ-
মাত্র ২ বছর বয়স রিয়ারেন। বাড়ির উঠানে ছুটাছুটি, এদিক ওদিক দৌড়ে খেলাধুলা করা আবার খেলতে খেলতে মিস্টির জন্য বায়না ধরে কান্না করছে। দৌড়ে মায়ের কোলে উঠে মাকে আলিঙ্গন করছে। মায়ের কাছে আবদার করছে বিভিন্ন খাবার ও খেলনা। এসব দেখে মায়ে চোঁখে জ¦ল ধরে রাখতে পারছেনা। অথচ রিয়ান জানেও না তার মায়ের কি হয়েছে।
আল্লাহ আমাকে যে মরন ব্যাধি দিয়েছে হয়তো সময়মত চিকিৎসার অভাবে আমি মারা যাবো। কিন্তু আমার কোলের এই সন্তানটা তো এতিম হয়ে যাবে, তাকে কার কাছে রেখে যাবো। আমার পরিবারের পক্ষ কোন ভাবেই সম্ভব না এতোগুলো টাকা জোগার করে চিকিৎসা করা। এমতাবস্থায় আমাদের পাশে যদি কেউ না আসে তাহলে আমার অসহায় এই বাচ্চটা এতিম হয়ে যাবে। বলছিলেন রিয়ানের মা স্মৃতি। সে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত।
ঝিনাইদহ পৌর এলাকার পবহাটি গ্রামেরর মোল্লা পাড়া এলকার মৃত রজব আলী মোল্লার একমাত্র ছেলে রাইজুল ইসলাম। বাবা মারা যাবর পর সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে এলাকার গ্রীজ ফ্যাক্টারীতে শ্রমীকের কাজ করে ভালই চলছিলো সংসার। মা, ছোট বোন, স্ত্রী ও দুই বছরের ১ বাচ্ছাকে নিয়ে বেশ ভালই ছিলেন রাইজুল। রাইজুলের স্ত্রী উম্মে হাবিবা স্মৃতি, মঝে মধ্যেই মাথায় ব্যাথা অনুভব করতে থাকলে কোন মেডিসিন হাউজ থেকে মাথা জ¦ালার টেবলেট এনে খাওয়াতেন। হঠাৎ মাথার ব্যাথা বেড়ে যাওয়ায়, তখন ১৯ নভেম্বর ২০২০-এ ঝিনাইদহ সমতা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সস এন্ড হাসপাতাল, শের-এ বাংলা নগর, ঢাকা থেকে নিউরোলজী ডাঃ রাশেদ ইমাম জাহিদ (কল্লোল) কে দেখানো হয়। তখন ডাঃ কল্লোল প্রাথমিক ভাবে দেখে দ্রæত ঢাকা নিউরো সাইন্স হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। রাইজুল ও তার স্ত্রী স্মৃতি দুজনে ১১ই জানুয়ারী ২১ তারিখে ঢাকাতে নিউরো সাইন্স হাসপাতলে গেলে, সেখান থেকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টরে পরীক্ষা করা হয়। ডাক্তার রিপোট দেখে বলেন, স্মৃতির মাথায় ব্রেন টিউমার হয়েছে। তাকে যতদ্রæত সম্ভব অপরেশন করাতে হবে। তার অপরেশনের জন্য বাংলাদেশেই খরচ হবে ১০ লক্ষ টাকা। এতোগুলো টাকা একবারে জোগার করা রাইজুলের পক্ষে সম্ভব নয়। এই ভেবে দুজনে ঢাকা থেকে ফিরে ভাবতে থাকে তাদের ২ বছরে সন্তান আফসান আহমেদ রিয়ানের কথা। তাদের সন্তানকি তাহলে এতিম হয়ে যাবে? কোথায় যাবে, কার কাছে থাকবে?
রাইজুলের চাচাতো ভাই এস এম ছানাউল্লাহ সূর্য বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তার এই অসহায়ের কথা প্রচার হলেও এখনো পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোন সংস্থা, কোন ব্যাক্তি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেনি। একমাত্র বিত্তবানদের সাহায্য ছাড়া তার কোন চিকিৎসা করার ক্ষমতা নাই।
রাইজুল বলেন, আমার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য ১০ লক্ষ টাকার পয়োজন। ডাক্তার বলেছেন একমাসের মধ্যে চিকিৎসা বা অপরেশন করাতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। আমার পক্ষে এতো টাকা জোগার করা কোন ভাবেই সম্ভব না। সমাজের বৃত্তবানরা যদি প্রত্যেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে তাহলে হয়তো আমার সন্তানটা এতিম হবে না।
ব্রেন টিউমার রুগী উম্মে হাবিবা স্মৃতি জানান, আমার যে মরণ ব্যাধিটা হয়েছে, যদি দ্রæত চিকিৎসা না করা হয় তাহলে হয়তো আমি মারা যাবো। তখন আমার এই কলের সন্তানটা অসহায় এতিম হয়ে যাবে। সমাজের বৃত্তবানদের কাছে আকুল আবেদন তারা যদি আমাকে সাহায্য করেন তাহলে সময়মত চিকিৎসা করতে পারলে, আমি বেঁচে যাবো। আর আমার কোলের সন্তানকে এতিম হতে বনে না। আমার সন্তাননের জন্যই হলেও আমাকে বাঁচতে হবে।