ঝিনাইদহের যে স্কুলে ঘুষ গ্রহণই সাধারণ ব্যাপার
সুলতান আল একরাম—
হরিনাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল পরিচালনা কমিটি সভাপতি আবু রেজা আল মামুন (বাচ্চু মোল্লা) বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ জোর করে আত্মসাৎ, বেতন ভাতায় স্বাক্ষর করার জন্য প্রতিমাসে নিয়মিত ঘুষ গ্রহণ,ও এক শিক্ষক কে ১০ হাজার টাকা না দিলে তাকে বহিষ্কার করার হুমকি ও শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত অসৎ আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে। যার কারনে এই স্কুলের শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধের পথে।
ঘটনাটা ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়ের ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ভাবনীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন যে আমাদের বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার পর থেকেই আমাদের সাথে বিভিন্ন প্রকার দুর্ব্যবহার করে। যেমন যে ভাষা গুলি ব্যবহার করা যায় না, সেই ভাষা গুলি আমাদের সাথে করে। আমরা একটি ঘরে মোটর সাইকেল রাখতাম সেখানে মোটর সাইকেল রাখতে দেবেন না, এক পর্যায়ে আমাদের সাথে এক প্রকার মারামারির মত পরিবেশ তৈরি করে যা উপরের নেতাদের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়।
প্রতিমাসে বেতন বিলে স্বাক্ষর করার জন্য ৫, ৭, ১০ হাজার টাকা নেয়। তাছাড়া সভাপতি গত ৪ তারিখে হঠাৎ করে অনিয়মিত ভাবে এসে বলে সহকারী প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সাহা কে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, তার অপরাধ কয়েক দিন আগে এসএসসির ফরম ফিলাপ জন্য ৩ জন ছাত্রছাত্রী কে ১৫০০ টাকা নিয়ে বললে, সে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলতে বললে, সে অপমান বোধ করে। এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে তার বহিষ্কার দাবী করে। এই অবস্থায় আমি বলি যে কাউকে বহিষ্কার করতে হলে যে নিয়ম আছে তারমধ্যে না পড়লে কি ভাবে তাকে বহিষ্কার করবো? তখন সে বলে যে তাকে বহিষ্কার না করলে তাকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। তখন এটা নিয়ে স্কুলে হই চই শুরু হয়ে যায়। তখন স্থায়ীয় পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার এসে গোলমাল থামায়। শুধু তাই নয় স্কুলের কয়টা দোকান ভাড়া দেওয়া আছে সেই টাকা নিজেই নিয়ে নেই।
এ পর্যন্ত সে স্কুলের তহবিল ও দোকান ভাড়া বাবদ প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমার স্কুলে এর আগে ৪ টি ফ্যান কে বা কারা শয়তানি করে ভেঙ্গে ফেলেছে। এই সময় নাইট গার্ডকে কারন দশান নোটিশ করলে আমাকে বলে যে এই স্কুল কি তোর মার ভাতারের স্কুল বলে গালি দেয় ও আমার মেয়ে কে হত্যার হুমকি দেয়।
এই প্রসঙ্গে সহকারী প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সাহা বলে সভাপতি বিজ্ঞানের দুই জন ছাত্র ছাত্রীর ১৫০০ টাকায় ফরম ফিলাপ বাবদ নিতে হবে। তখন আমি বলি যে প্রধান শিক্ষক না বললে আমি এই টাকা নিতে পারব না। এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে আমাকে সৌকেচ করা হবে। তখন ঘটনার জন্য আমি ক্ষমা চাই। তারপরেও আমি জানতে পারি যে আমাকে সৌকেচ করা হবে না যদি আমি ১০ হাজার টাকা দিই, কিন্তুু আমি ঐ টাকা দিতে অস্বীকার করি।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত অন্য সহকারী শিক্ষক রা বলে যে উনি সভাপতি হওয়ার পর থেকেই আমাদের স্কুলে ফজলুর রহমান নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা তার নিজের টাকা দিয়ে ভবন তৈরি করে দেয়। সেই ভবন ভেঙ্গে মার্কেট তৈরি করার জন্য প্রস্তাব দেন কিন্তুু প্রধান শিক্ষক তার সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাদের সাথে এই আচরন গুলি শুরু করে। উক্ত ঘটনা কে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধের পথে।
এই প্রসঙ্গে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু রেজা আল মামুন (বাচ্চু মোল্লা) সাথে মোবাইলে কথা বললে তার বিরুদ্ধের সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে উল্লেখ করে বলে যে প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকেরা ছাত্র ছাত্রীদের নিকট থেকে ফরম ফিলাপ জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার জন্য আমি তাদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করি নাই। যাহা নিয়ে এর আগে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হয়েছে। শিক্ষকরা নিজেরাই মারামারি করেছে যাহা নিয়ে আমি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। বেতন বিলের স্বাক্ষর করার জন্য আমি কোন টাকা চাই নাই। কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এই প্রসঙ্গে হরিনাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম বলেন যে ঘটনা টা আমার জানা নেই। এই বিষয়ে আমার নিকট কোন অভিযোগ করতে আসে নাই। যদি অভিযোগ করে তাহলে আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।